আজ - শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:৩২

আরবপুর ইউপি সদস্য তরিকুলের মারপিটে মুদি দোকানদার আহত!

আবুল বারাকাত (যশোর) :: গতকাল (০৪ ডিসেম্বর বুধবার) যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের ০৫ নং ওয়ার্ডের খোলাডাঙ্গা গ্রামে একটি ঘরোয়া সালিশকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটে। সালিশের একপর্যায়ে তরিকুল ইসলামের ক্যাডার বাহিনীর প্রহারে আহত হন খোলাডাঙ্গার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো: শহিদুল ইসলাম, স্ত্রী রহিমা বেগম সহ তাদের অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া কন্যা শারমিন। এ বিষয়ে ভুক্তোভুগি শহিদুল ইসলাম যশোর কোতয়ালী থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন।

জানা যায় মা ছেলের পারিবারিক কোলাহলকে কেন্দ্র করে বুধবার সন্ধ্যায় বিনা নোটিশে ভূক্তভোগী শহিদুল ইসলামের বাড়িতে একটি গ্রাম্য সালিশে বসেন স্থানীয় ০৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম। উক্ত সালিশে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলামের সাথে তার ক্যাডার বাহিনির শাহ আলম বাবু, মিজান,কালা মাহাবুব সহ প্রায় ১০ জন উপস্থিত হন।

সালিশের এক পর্যায়ে শহিদুল ইসলামের একজন প্রতিবেশী মহিলা জাহানারা বেগম কিছু কথা বলার চেষ্টা করলে শহিদুল ইসলাম তাকে চুপ করতে বলেন। তখনই মেম্বর তরিকুল ইসলামের ক্যাডার বাহিনীর সদস্য শাহ আলম বাবু শরিফুলকে একটি লাঠি (শরিফুলের মায়ের ব্যবহৃত) নিয়ে আঘাত করেন। এসময় শহিদুলের স্ত্রী রহিমা বেগম ঠেকাতে গেলে তাকেও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন শাহ আলম বাবু এক পর্যায়ে তাদের অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া কন্যা শারমিনকেও একই ভাবে প্রহার করেন তিনি।

শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাকে বিনা দোষে মেম্বারের ইঙ্গিতে বেদম প্রহার করেছে। তারা আমার দোকান থেকে নগদ ১২০০০ (বারোহাজার) টাকা সহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চেয়ে থানায় মামলা করবো।

এ বিষয়ে আহত শহিদুল ইসলামের বোন লাইলি বেগম বলেন, আমার মা মানসিক ভারসাম্যহীন। বেশ কিছুদিন আমাদের পারিবারিক কোলাহল চলছে। আমার মা তরিকুল মেম্বারকে বিচার করতে ডাকলে মেম্বার তার সাথে প্রায় ১০ জন নিয়ে আসেন । একসময় শাহ আলম বাবু আমার ভাই, ভাবি এবং তাদের মেয়েকে মারতে শুরু করে।এরপর আমরা সহ গ্রামের সবাই তাদেরকে ধাওয়া দিলে তারা আমার ভাইয়ের দোকানের ক্যাশ থেকে নগদ ১২,০০০।– (বারো হাজার) টাকা এবং দোকান থেকে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে দৌড়ে পালায়। পরবর্তীতে গ্রামবাসীর সহায়তায় আমার ভাইকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শহিদুলের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, আমাদের পারিবারিক কোলাহলকে কেন্দ্র করে আমার শাশুড়ি আমাদের বাড়িতে একটি সালিশ ডাকেন। সেখানে আমার স্বামীকে মারপিট করলে আমি ঠেকাতে যায় ঠিক তখন তারা আমাকেও মারপিঠ করে। একই ভাবে তারা আমার মেয়েকেও প্রহার করে।  

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় আরবপুর ইউনিয়নের ০৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম একজন  প্রকাশ্য মাদকসেবী।খোলাডাঙা কদমতলা জামে মসজিদের সামনে তার নিজ ঘরে বসে অন্যান্য জায়গার জুয়াড়িদের আমন্ত্রন জানিয়ে সেখানে মাদক সেবন সহ জুয়ার আসর বসান তিনি।তার আপন দুই ভাইপো জঙ্গী সংগঠনের সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে সে তার ভাইপোদেরকে দিয়ে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে হুমকি ও বিভিন্ন ভাবে বেইজ্জতি করছে। তার বাড়ি খোলাডাঙ্গা হওয়ার কারণে সে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে নিজের স্বার্থকে হাছিল করতে চায়।

এর আগে আরবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে বেধড়কভাবে জনগনের সামনে মারপিট সহ ইউ পি সচিব সালমা কানিজ ডালিয়ার সঙ্গে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এর আগে ইউপি সদস্য ০১ মো: আশরাফুল আলম, ইউপি সদস্য ০৮ মো:উজ্জ্বল রহমান সহ অনেকেই বিভিন্ন হয়রানির স্বীকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে এজাহারটির তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই জিয়াউর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনপূর্বক বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। আজ বিকালে বাদীপক্ষের বক্তব্য শুনেছি। বাদী বিবাদী পক্ষ স্থানীয়ভাবে বসে সমাধান না হলে আগামীকাল বাদীপক্ষ মামলা করবেন বলে জানান।    

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত