আজ - শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - রাত ১:১৪

মণিরামপুরে ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে ছয় হোটেল মালিকের কাছ থেকে চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে। আর এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে শ্যামকুড় ইউপি সচিব আবদুল আলীম এবং ইউপি সদস্য আবদুল হালিমকে। তবে ইউপি সদস্য আবদুল হালিমের দাবি ইউএনওর নামে কৌশলে এ চাঁদাবাজীতে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় তিনি মণিরামপুর থানায় একটি জিডি করেছেন। জানা যায়, শ্যামকুড় ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড সদস্য(মেম্বার) আবদুল হালিম ২৮ মার্চ রাত আটটার দিকে চিনাটোলা বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী ভোলা নাথ ঘোষের সাথে দেখা করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান তার সাথে কথা বলবেন।

একপর্যায়ে আবদুল হালিম তার মোবাইলফোনটি ভোলা নাথ ঘোষের কাছে দেন। এ সময় অপর প্রান্ত থেকে(০১৬১০-৪৭২৮৪২) নিজেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে ভোলা নাথকে ভেজাল ব্যবসায়ী উল্লেখ করে ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। যদি না দেওয়া হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে জেল জরিমানার হুমকি দেওয়া হয়। ফলে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে হোটেল ব্যবসায়ী ভোলা নাথ ঘোষ অপর প্রান্ত থেকে কল করা বিকাশ নম্বরে(০১৬১০-৪৭২৮৪২) ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।

পরবির্ততে ইউপি সদস্য আবদুল হালিম বাজারের হোটেল গার্ডেন কফি হাউজে যান। এ সময় তিনি হোটেলের মালিক চিত্ত রঞ্জন ঘোষের কাছে ইউএনওর নাম করে মোবাইল ফোনটি দেন।

চিত্তরঞ্জন জানান, এসময় অপরপ্রান্ত থেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন হুমকি দেখিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু চিত্ত রঞ্জন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তিতে ইউপি সদস্য আবদুল হালিম একইভাবে বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী কবির হোসেন, বদু কুন্ডু, জয় কুন্ডু, এবং পদা কুন্ডুর হোটেলে গিয়ে ইউএনওর নামে তাদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলান।

অভিযোগ রয়েছে মোবাইল ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে নিজেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে একইভাবে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে তাদের কাছেও অনুরূপভাবে বিভিন্নহারে টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টি হোটেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হলে পরদিন ভূক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসানের সাথে দেখা করে প্রতারনার বিষয়টি নিশ্চিত হন।

ইউএনও অবশ্য প্রতারনার ব্যাপারে ভূক্তভোগীদের পরামর্শ দেন থানায় যোগাযোগ করতে। এ দিকে হোটেল ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর রোষানলে পড়েন ইউপি সদস্য আবদুল হালিম।

আবদুল হালিম জানান, ২৮ মার্চ সকালে পরিষদের সচিব আবদুল আলীম তাকে ফোনে জানায়, ইউএনও তার(হালিম) সাথে ০১৬১০-৪৭২৮৪২ নম্বর মোবাইলফোন থেকে কল দিবে। আবদুল হালিম জানান, বিকেলে ওই নম্বর থেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে তাকে বলা হয়, বাজারের হোটেল ব্যবসায়ীদের সাথে তার সাথে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিতে। সে মোতাবেক ইউপি সদস্য আবদুল হালিম চিনাটোলা বাজারে গিয়ে একে একে ছয়জন হোটেল মালিকের সাথে ওই নম্বরে ইউএনওর নামে কথা বলান।

ইউপি সচিব আবদুল আলীম জানান, ওই নম্বর থেকে ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসানের হুবহু কণ্ঠস্বর থেকে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয় ইউপি সদস্য আবদুল হালিমের সাথে যোগাযোগ করার।

আবদুল আলীমের দাবি, তিনি ওই নম্বরটি দেন হালিমকে। ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জানান, ইউএনওর কন্ঠস্বর কোন করে ইউপি সদস্য আবদুল হালিমকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজী করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীদের তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন থানায় যোগাযোগ করতে। থানার ওসি(সার্বিক) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আবদুল হালিম ২৮ মার্চ রাতে ওই নম্বর(০১৬১০-৪৭২৮৪২) উল্লেখ করে একটি জিডি করেছেন। যার নম্বর ১৩২৩।

সূত্র – দৈনিক নওয়াপাড়া

আরো সংবাদ