আজ - বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:১৩

মণিরামপুর পৌর নির্বাচন:নৌকা প্রতিকে লড়বে মাহমুদুল হাসান, ধানের শীষে শহীদ ইকবাল

মণিরামপুর পৌরসভার নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে উপজেলার ২ শীর্ষ নেতার ভোট লড়াই হবে। বৃহত্তম দুই রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর ভিন্ন মাত্রার জমজমাট প্রচার-প্রচারণায় আড়োলন সৃষ্টি হলেও-প্রচারে এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। নির্বাচনে তিনজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটের লড়াই হচ্ছে কাজী মাহমুদুল হাসানের নৌকা প্রতীকের সাথে শহীদ ইকবাল হোসেনের ধানের শীষ প্রতীকের।

জানা যায়, আগামি ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে মণিরামপুর পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন। আওয়ামী লীগের মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আলহাজ্জ্ব কাজী মাহমুদুল হাসান (নৌকা), বিএনপি মনোনীত উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাড. শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন (ধানের শীষ) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাস্টার আবু তালেবের হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রতীক পাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত প্রার্থী, প্রার্থীদের কর্মী ও ভোটারদের মধ্যে একটু গা-ছাড়া ভাব থাকলেও প্রতীক পাবার সাথে সাথেই জমে উঠছে নির্বাচনী আমেজ। প্রচার প্রচারণা ও ভোট প্রার্থনায় প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী মাহমুদুল হাসান ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শহীদ ইকবাল হোসেন ব্যস্ত সময় পার করলেও নির্বাচনের মাঠ দেখা নেই ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মাস্টার আবু তালেবের।

১২টি গ্রামের সমন্বয়ে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে এ পৌরসভা গঠিত। ইতোমধ্যে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা হয়েছে। সে মোতাবেক এর উন্নয়নের কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়াতনে এ পৌরসভায় প্রায় অর্ধ লাখ মানুষের বসবাস। মোট ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার ৯শ’ ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৮শ’ ৩৬ জন এবং মহিলা ১১ হাজার ১শ’ ২৯ জন।

ভোটাররা এখন আলোচনায় নিয়েছেন কে বিজয়ী হবেন মণিরামপুর পৌরসভার পঞ্চম পৌর পিতা? প্রধান ২ প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা ও ধানের শীষের ২ হেভিওয়েট প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন খুব জোরেসোরে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উভয় প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোট প্রার্থনায় অবিরাম গতিতে ছুটে চলেছেন। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের ২ হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ধীরে ধীরে পাড়া-মহল্লায় চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস পাড়ায় চলছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। সেই সাথে থেমে নেই দৈনিক পত্রিকা, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এ সমস্ত প্রচার-প্রচারণা, আলোচনা-সমালোচনা আর সাধারণ ভোটারদের মতামতকে প্রাধান্য দিলে বলা যায় উভয় প্রার্থীই যোগ্য এবং দু’জনের মধ্যে তুমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে কেউ কেউ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে কিছুটা এগিয়ে রাখছেন। কারণ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান চলমান সময়ে পৌর মেয়র হিসেবে ব্যাপক উন্নয়নসহ পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সহায়তায় পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছেন। তাছাড়া সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নে নৌকার প্রার্থীর বিকল্প নেই-এমনটি মনে করেন সুধিজনেরা। তাছাড়া অতীতের সকল ভুল ভ্রান্তি দূরীভূত করে মণিরামপুরের আওয়ামী লীগ এখন একাট্টা হয়ে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে পাস করাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগসহ দলটির সকল পর্যায়ের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এলাকা ভাগ করে নিয়ে কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে যাচ্ছেন। যে কারণে সাধারণ ভোটাররা অনেকটা কাজী মাহমুদুল হাসনের নৌকা প্রতীকের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছেন। এ হিসেবে জয়ের পাল্লাটা তার দিকেই বেশি।

এক্ষেত্রে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী অনেটা পিছনে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন এ রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতার বাইরে অবস্থান করছে। তাছাড়া সরকার বিরোধী বিভিন্ন মামলায় জর্জরিত দলটির নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি মূলদল বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এ উপজেলায় লবিং-গ্রুপিং এখন চরম পর্য়ায়ে। দলের বৃহৎ একটি অংশ ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ মোহাম্মদ ইকবালের ঘোর বিরোধী। দলীয় সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিয়ে যদিও তারা ধানের শীষের বিরোধী কোনো মনোভব দেখাচ্ছেন না-তবুও এ পক্ষ কি করবে সেটা ভাবার বিষয়।

অন্যদিকে বিএনপির শরীক দল জামায়াতে ইসলাম এ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেইনি। প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। যেই নির্বাচিত হোক না কেন-তাতে কিছু আসে যায় না এমনই একটা গা-ছাড়া ভাব তাদের। তারা আদৌ ভোটের মাঠে যাবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। এ ব্যাপারে তাদের কোনো আলোচনা বা সমালোচনা নেই। যেন দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছেন তারা।

সুতরাং দলের লবিং-গ্রপিং এবং শরীকদের নিষ্ক্রিয়তা ধানের শীষের প্রার্থীর ভরাডুবি হবার সম্ভবনাই বেশি।

সার্বিক বিচার বিশ্লেষণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসানের নৌকা প্রতীক আগামি ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনে বিজয়ী হবেন এমনটা ভোটাররা মনে করছেন।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত