আজ - বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - বিকাল ৫:১৫

যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সফল অভিযানে মনিরামপুর থেকে ৮ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার।

যশোরের মণিরামপুরে ডাকাতির ঘটনায় ৮ জন গ্রেপ্তার
যশোরের মণিরামপুরের কোদলাপাড়ায় মেঘনা বেকারির মালিকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত দুই-তিন দিনে অভিযান চালিয়ে খুলনার তেরখাদা, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।

এরপর বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে ডাকাতদের দুজনকে সঙ্গে নিয়ে ডাকাতি হওয়া বাড়িতে আসে পুলিশ। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থলের তিন কিলোমিটার দূরে টেংরামারী বিলের বকুলের মাছের ঘের থেকে ডাকাতি হওয়া দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এ

সময় মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান, যশোর জেলা ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার, রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন, ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান, রেজাউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার আট ডাকাতের মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন ঢাকার মিন্টু, মাদারীপুরের লিটন, খুলনার কালু, ঝিনাইদহের কবির ও গোপালগঞ্জের রিকশাচালক সুরুজ।

গ্রেপ্তারকৃত লিটনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, একটি চুরির মামলায় লিটন মাদারীপুর জেলে ছিলেন। সেখানে ডাকাতদের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর বাইরে এসে তাঁরা ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। একপর্যায়ে যশোর রেলস্টেশন এলাকার রিকশাচালক সুরুজের সঙ্গে পরিচয় হয়। সুরুজের দেওয়া সূত্র ধরে তাঁরা সাতজন মনিরামপুরে বেকারি মালিকের বাড়িতে ডাকাতি করেন।

গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত ২টায় ডাকাতি করার পর বিল দিয়ে নেমে তাঁরা বকুলের মাছের ঘেরের পাড়ে এসে বিশ্রাম নেন। সেখানে ওই বাড়ি থেকে আনা দুটি মোবাইল ফোন ফেলে যান। তাঁরা ৩৯ হাজার টাকা ও দুটি স্বর্ণের চেইন, এক জোড়া কানের দুল ও একটি আংটি নেন। পরে সর্দার কালুর সহায়তায় খুলনায় একটা দোকানে ১ লাখ ৮ হাজার টাকায় অলংকারগুলো বিক্রি করেন। এ কাজে তাঁরা ১৮-২০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন।

পুলিশ ও বেকারি মালিক মশিয়ার রহমান জানান, যশোরের একটি দোকান থেকে বেকারির জন্য কেনা মালামাল দীর্ঘদিন রিকশায় করে মেঘনা বেকারিতে আনতেন রেলস্টেশন এলাকার সুরুজ নামে এক চালক। সেই সূত্রে বেকারির মালিকের সঙ্গে তাঁর ভালো জানাশোনা হয়। গত সপ্তাহে বেকারির মালামাল এনে মালিকের রান্নাঘরে তুলে দেন সুরুজ। এরপর শুক্রবার বিকেলে ডাকাত মন্টু ও লিটনকে রিকশায় করে এনে বেকারিতে ঢোকেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে আশপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়ান। এরপর রাতে এসে তাঁরা ডাকাতির ঘটনা ঘটনান।

ঘটনার পর তদন্তে নামে ডিবি। বেকারির মালিক মশিয়ারের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে ঘটনার এক দিন পরে সুরুজকে আটক করে ডিবি। এরপর তাঁর দেওয়া সূত্র ধরে বাকি সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপন সরকার বলেন, ‘মন্টু ও লিটন পেশাদার ডাকাত। তাঁরা বৈদ্যুতিক বাল্ব বা লাইট হকারি করে বিক্রির মাধ্যমে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। এ দুজন সুরুজের রিকশায় ঘোরাফেরা করার সময় তাঁর মোবাইল নম্বর নেন। এরপর তাঁরা একসঙ্গে কয়েকটি স্থানে ডাকাতি করেছেন।’

ওসি বলেন, ‘১৭ বছর যশোরে থাকার কারণে এই অঞ্চলের সব রাস্তা সুরুজের চেনা। গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে তিনি লিটন ও মন্টুকে নিয়ে মেঘনা বেকারিতে আসেন। সুরুজকে আটকের পর তাঁর মোবাইল ফোনের কললিস্ট থেকে এ তথ্য প্রমাণিত হয়েছে।’

ওসি রুপন আরও বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলন করে ডাকাতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

আরো সংবাদ