আজ - মঙ্গলবার, ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - রাত ৮:৫৭

উহু কামরুল! আহ কামরুল! 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভীমরুলের শুল যদি গায়ে ফোটে, তাহলে বেদনায় মানুষ আর্তনাদ করে বলে আহ্! উহু! এখন খাদ্যমন্ত্রীর চালের হুলের ফোটায় বিদ্ধ হয়ে চিৎকার করছি আহ! উহু! সাধারণ মানুষের এই আত্মচিৎকারে সারাদেশ কাঁপছে। বিকারহীন শুধু একজন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। আমাদের খাদ্যমন্ত্রী। চালে চ্যাপ্টা মানুষ বলছে আহ্‌ কামরুল! উহু কামরুল! অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তাঁর কপাল মাথার শেষ মোহনায় মিলিত হয়েছে। মাথা আর কপাল দেখলেই বোঝা যায় কত ভাগ্যবান তিনি। ৯৪ এ ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচন করে হেরেছিলেন। এরকম পরাজয়ে অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সমাপ্ত হয়ে যায়, কিন্তু কামরুল ভাগ্যবান। তাঁর ক্যারিয়ার সুপারসনিক গতিতে এগিয়েছে। ৯৬ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাঁকে ঢাকার নিম্ন আদালতের পিপি করা হয়। সেখানেও নানারকম নয়ছয়ে জড়িয়ে পড়েন। সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে তিরস্কার করে। তাতে কী? ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন এলে কোর্টের বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করে পেয়ে যান এমপির টিকেট। তারপর হন প্রতিমন্ত্রী। এ যেন রাজকন্যার সঙ্গে অর্ধেক রাজত্ব। প্রতিমন্ত্রী হয়ে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার নাটকের প্রধান খলনায়কে পরিণত হন। এনিয়ে বাজারে যেসব গল্প আছে, তা এখানে নাই বললাম। খোদ আওয়ামী লীগই তাঁর বিরুদ্ধে এনিয়ে বাণিজ্যকরণের অভিযোগ এনেছিল।এরপরও তাঁর উত্থানের গতি কমেনি।

 

২০১৪ সালে প্রতিমন্ত্রী থেকে হলেন  পূর্ণমন্ত্রী। তাও আবার খাদ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী হয়েই তিনি পঁচা গমের দুর্গন্ধে দূষিত করলেন গোটা দেশকে। তবুও তাঁর কিছু হয় না। খাদ্য মন্ত্রাণালয়ের বিষয়ে তাঁর মনোযোগ যৎসামান্য। তাঁর মনোযোগ রাজনৈতিক খিস্তি খেউরেই বেশি। সকাল সন্ধ্যা রাজনৈতিক অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে উদ্ভট কথা বার্তা বলাই তাঁর প্রধান কাজ। এর মধ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। আদালত তাঁকে শাস্তিও দেন। এরপরেও তার ভাগ্যে ‘দুর্যোগের ঘনঘটা’ আসেনি। এবার তিনি চাল নিয়ে চালবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত। আওয়ামী লীগের অহংকারের জায়গাগুলোর মধ্যে একটা ছিল দ্রব্যমূল নিয়ন্ত্রণে রাখা। ৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় রেখেছিল। ২০০৯ সালে অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দায়িত্ব নিয়ে বেসামাল চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনে আওয়ামী লীগ। সেই আওয়ামী লীগেরই সব অর্জন লন্ডভন্ড করছে ‘চাল’ নামক হারিকেন। লাফিয়ে লাফিয়ে চালের দাম বাড়ছে। মন্ত্রী কী করছেন কেউ জানে না। তিনি যা বলেন, মানুষ তা বিশ্বাস করে না। পঁচা আতপ চাল দিয়ে মানুষের ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছেন তিনি। তবুও তাঁর ‘কপাল’ ছোট হয় না।অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের মতো কিছু ‘আপদ’ সব সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে লতাপাতা মতো লেপ্টে থাকে। এদের কারণে আওয়ামী লীগকেই কেবল দূর্ভোগ পোহাতে হয় না, গোটা জাতিকে দুর্দশায় পড়তে হবে। তবুও এদের হাত থেকে মুক্তি পায় না কেউ-না আওয়ামী লীগ, না সাধারণ মানুষ।এদের কি খুব দরকার আওয়ামী লীগে? আওয়ামী লীগ এই সব কামরুলদের দায় কত বহন করবে?

আরো সংবাদ