আগারগাওয়ে কোস্টগার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসমুদ্রসীমা রক্ষায় কোস্টগার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ বাহিনীকে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করা হবে। এ সময় তিনি জানান, দক্ষিণাঞ্চলে হবে আরেকটি শিপইয়ার্ড।
মঙ্গলবার সকালে আগারগাওয়ে কোস্টগার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। এসময় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের দু’টি অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল, পাঁচটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, দু’টি ফাস্ট প্যাট্রোল বোট এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বেইস, ভোলা’র কমিশনিং প্রদান করেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী জানান, খুব শিগগিরই এ বাহিনীতে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, হোভারক্র্যাফট ও দ্রুতগতিসম্পন্ন বোট যুক্ত হতে যাচ্ছে। নতুন নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তুলতে আমরা কোস্ট গার্ডকে একটি আধুনিক ও যুগপোযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।
বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি দেশের ব্লু ইকোনমির নিরাপত্তা বিধানে কোস্টগার্ড অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাহিনীতে ১৫ হাজার জনবল বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকার প্রধান আরো জানান, বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া জাটকা নিধন রোধে এবং মা ইলিশ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের প্রশংসনীয় ভূমিকা রয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষে কোস্টগার্ডের বহরে এই নৌযানগুলো যুক্ত হওয়া সংস্থাটির জন্য একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করেছে। কারণ, আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল টহলে রাখাটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তার সরকারের সময়ে কোস্ট গার্ডের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত প্রায় ১২ বছরে কোস্ট গার্ডে’র জন্য বিভিন্ন আকারের ৫৫টি জাহাজ ও জলযান নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনটি প্রকল্পের আওতায় কোস্ট গার্ডের বেইসসমূহের কর্মকর্তা ও নাবিকদের বাসস্থান, অফিসার্স মেস, নাবিক নিবাস ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, পটুয়াখালী অঞ্চলে নিজস্ব প্রশিক্ষণ বেইস ‘বিসিজি বেইস অগ্রযাত্রার’ মাধ্যমে কোস্ট গার্ডের জনবলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ বাহিনীর সদস্যরা স্বল্পতম সময়ে সুবিশাল সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে।’ তিনি কোষ্টগার্ড সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন জাহাজ ও ঘাঁটি কমিশনিংয়ের মাধ্যমে এ বাহিনীর সক্ষমতা আজ আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল।
প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, এসব জাহাজ ও ঘাঁটি কোস্ট গার্ড সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ, মানসিক বিকাশ ও উন্নত মনোবল অর্জনে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে সমর্থ হবে।’
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, দেশপ্রেম, সততা ও ঈমানের সাথে দায়িত্ব পালন করবেন, কোস্টগার্ডের সুনাম যেন সব সময় বজায় থাকে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। এই বাহিনীর ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং আপনাদের সার্বিক কল্যাণে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সহায়তা সরকার দিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীকে অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের একটি সুসজ্জিত চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. আশরাফুল হক অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন। উন্নয়ন, সাহসী অপারেশন ও সেবামূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পদক পেয়েছেন ৪০ কোস্ট গার্ড সদস্য।