আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ৬:৫০

ক্যাসিনো কালচার বি এন পির সৃষ্টি

খান জাহান আলী নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে ক্যাসিনো নিয়ে বেশ তোলপাড় চলছে। ক্যাসিনো এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে মানুষ অত্যাধুনিক বিলাসিতার জন্য উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন চাহিদার জোগান পায়। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে বি এন পি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্রাদার্স ইউনিয়নে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত এ ক্যাসিনো কালচারের জন্ম হয়।   

বি এন পির সাদেক হোসেন খোকা, মির্জা আব্বাসদের শুরু করা এ ক্যাসিনো কালচার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগই শুরু করেছে বলে যেমনটা প্রচার করা হচ্ছে, বাস্তবতা তেমনটাও নয়। গতরাতেই বিভিন্ন সময় র‍্যাব এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বিভিন্ন ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়েছে এবং অন্তত তিনটি ক্যাসিনো সিলগালা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে এই কালচার নতুন নয়। অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্রাদার্স ইউনিয়নে ক্যাসিনো কালচার শুরু হয়েছিল। ব্রাদার্স ইউনিয়নের এই জুয়ার আসরে বিএনপির সাদেক হোসেন খোকা, মির্জা আব্বাস সহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিও যেতেন।

সাদেক হোসেন খোকার উত্থানই ব্রাদার্স ইউনিয়নের ক্যাসিনোর মাধ্যমে । সে সময় সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মির্জা আব্বাসও মতিঝিলের ক্লাবগুলো দখল করেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েই মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে আরামবাগ ক্লাব ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবেও ক্যাসিনো শুরু করা হয়।


https://www.facebook.com/profile.php?id=100041581120235


মির্জা আব্বাস আর সাদেক হোসেন খোকাকে অনুসরণ করে মোসাদ্দেক আলী ফালু মোহামেডান ক্লাবেও ক্যাসিনো শুরু করেছিলেন। সেখানে ভিন্নরূপে শুরু করা হয়েছিল হাউজি ব্যবসা।

৯১-৯৬ সালে বিএনপির আমলে একমাত্র আবাহনী ছাড়া অন্য সবগুলো ক্লাবেই জুয়া-ক্যাসিনোর বাজার বসানো হয়েছিল। বিএনপির প্রভাবশালী তিন নেতার তত্ত্বাবধানেই এগুলো চলছিল।


২০০৬ এ বিএনপি পতনের পর ওয়ান ইলেভেন সরকার আসলে এই ক্যাসিনো বাণিজ্য লন্ডভন্ড হয়ে যায়। সবগুলো ক্লাবেই তখন জুয়ার আসর বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দুই বছর কোনো ক্যাসিনো ছিল না। এরপর আস্তে আস্তে ধাপে ধাপে ক্যাসিনোগুলো আবার চালু করা হয়।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রত্যেকটি ক্যাসিনোর সঙ্গে স্থানীয় থানা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যোগসাজশ আছে। তাদের সাথে আঁতাতের মাধ্যমেই এই ক্যাসিনোগুলো পরিচালিত হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ক্যাসিনোর মালিকদের সুসম্পর্কের কথা সবাই জানতো। এজন্যই এ নিয়ে কেউই মুখ খুলতো না।


৯৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর ১৯৯৬- ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও এই ক্লাবগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছিল বিএনপির হাতেই। পুলিশের নাকের ডগায় বসেই এই ক্যাসিনোগুলো চলেছে। সাদেক হোসেন খোকা তখন এমপি থাকার কারণে কেউ তাকে স্পর্শ করেনি। মির্জা আব্বাসের ক্যাসিনোও চলেছে ঠিকঠাক মতোই। আর প্রভাবশালী হওয়ায় মোসাদ্দেক আলী ফালুর নেতৃত্বে মোহামেডানে হাউজি এবং জুয়ার আসরের পরিধি বেড়েছিল বহুগুণে। মোহামেডান ছাড়াও মোসাদ্দেক আলী ফালু তখন রহমতগঞ্জ ক্লাবও দখল করে নিয়েছিলেন। সেখানেও দেদারসে চলে ক্যাসিনো ব্যবসা।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত