নাঈম সাব্বির (স্পেশাল করসপন্ডেন্ট পলিটিক্স): শুরুটা ২৮ অক্টোবর বিকালে যশোরের মনিরামপুর ঢাকুরিয়া স্কুল মাঠের জনসমুদ্র থেকে। সে দিন আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ প্রয়াত খান টিপু সুলতানের স্মরনসভার আয়োজন করা হয়।হাইস্কুল মাঠ ছাড়িয়ে স্মরণসভার বিস্তৃতি ঘটে ইউনিয়ন পরিষদ, হাসপাতাল মোড়সহ গোটা ঢাকুরিয়া বাজারে। মুহুর্তেই স্মরনসভা রূপ নেয় জনসমুদ্রে যেন কোন নির্বাচনী জনসভা। ঢাকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দূর্গাপদ সিংহের সভাপতিত্বে খান টিপু সুলতান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন টিপু সুলতানের সহধর্মিনী প্রফেসর ডা.জেসমিন আরা বেগম। সে দিন নেতাকর্মী ও টিপু ভক্তরা বিশাল গাড়ী বহরে সমাবেশ স্থলে নিয়ে আসেন জেসমিন কে। শোক সভার এক পর্যায়ে বক্তরা সহ নেতাকর্মীরাও দাবী তোলেন জেসমিন বেগম নৌকার প্রার্থী হতে, অনুরোধ করেন টিপু সুলতানের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে। একপর্যায়ে জনতার দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে জেসমিন আরা বেগম বলেন “আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন তাহলে আমি আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আপনাদের প্রিয় নেতা খান টিপু সুলতানের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করব। তবে সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং নৌকা প্রতিকের পক্ষে কাজ করতে হবে”
সে দিনের শোকসভায় প্রভাষক মামুনুর রশিদ জুয়েল ও মিকাইল হেসেনেরে যৌথ পরিচালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান সরদার বাহাদুর আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী, রোহিতা ইউপি চেয়ারম্যান আবু আনসার, পৌর কাউন্সিলর গৌর কুমার ঘোষ, টিপু সুলতানের বড় ছেলে হুমায়ুন সুলতান সাদাব, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ সরকার বাবু, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আদম আলী, মহিলা লীগ নেত্রী আমেনা বেগম, কৃষক লীগ সভাপতি সুকৃতি বিশ্বাস প্রমুখ। স্মরণসভা উপলক্ষে দলের প্রতিপক্ষরা আয়োজকদের বিরুদ্ধে নানামুখি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। স্মরণসভার প্রধান আয়োজক ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এরশাদ আলী জানান, কয়েকদিন আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা মোবোইল ফোনে ইউপি চেয়ারম্যান দূর্গাপদ সিংহকে এ সভা বাতিল করতে নানামুখি হুমকি দেন। তিনি আরো জানান, এ ছাড়া পৌরসভার এক জনপ্রতিনিধি তাকে জীবননাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে দূর্গাপদ সিংহ থানায় জিডি করেছেন। তারপর নড়েচড়ে বসেছেন মনিরামপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য তিনি দলীয় প্রতিপক্ষ জেসমিন কে মোকাবেলা করতে নানা ধরনের কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করছেন তার মধ্যে টিপু সমর্থকদের হুমকি ধামকি মামলা এসব অন্যতম। অন্যদিকে টিপু সুলতানের পুত্রবধূ ডা.শামরুখ মেহজাবিন শামা হত্যা মামলাটি মিমাংসা হয়ে গেলেও তা আবার পুণরায় বিচার করার জন্য মানববন্ধন করছেন তন্দ্রা ভট্টাচার্য। রবিরবার বিকালে যশোর শহরে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, জেলা শাখার ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অবিলম্বে ডা. শামারুখ হত্যার পুনঃতদন্ত করে দোষীদের সনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। মানববন্ধনে শামরুখের বাবা নুরুল ইসলামের দাবি করেন, ‘আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। এজন্য মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার প্রাপ্তির অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। আদালত থেকে মামলার নথিপত্র গায়েবেরও ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও হাল ছাড়ব না। সব কিছু বিক্রি করে হলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’ তন্দ্রা ভট্টাচার্য এমপি স্বপন ভট্টাচর্যের স্ত্রী এবং যশোর জেলা মহিলা পরিষদের সাধারন সম্পাদক। স্বামীর দৈন্যদশা দূর করতে স্ত্রী তন্দ্রা শামরুখের বাবা নুরুল কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। জেসমিন আরা বেগম ও তার ছেলে হুমায়ন কে রাজনীতির মাঠ থেকে সরাতে এ কৌশল অবলম্বন করছেন তারা এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এ ব্যাপারে যশোর জেলা আ’লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, মিমাংসিত বিষয় নিয়ে অতি ঘাটাঘাটি ভাল লক্ষন নয়। তাছাড়া যাদের বিরূদ্ধে অভিযোগ তারাতো এখন আইনগতভাবে অভিযুক্ত নয়।