আজ - রবিবার, ২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৩৫

ডা. শামারুখ ‘হত্যা’র বিচার দাবিতে যশোরে ফের মানববন্ধন

যশোর প্রতিনিধি:  ডা. শামারুখ ‘হত্যা’র বিচার দাবিতে যশোরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সম্মিলিত নাগরিক সমাজ যশোরের ব্যানারে রোববার বিকেলে শহরের নেতাজী সুভাষ চন্দ্র রোডে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ডা. শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম, সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি শহিদুল হক বাদল, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য, আইডিইবি যশোর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক সাইদুর রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মমতাজ পারভীন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তরা অবিলম্বে ডা. শামারুখ হত্যার পুনঃতদন্ত করে দোষীদের সনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। মানববন্ধনে সুমির বাবা নুরুল ইসলামের দাবি করেন, ‘আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। এজন্য মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার প্রাপ্তির অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। আদালত থেকে মামলার নথিপত্র গায়েবেরও ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও হাল ছাড়ব না। সব কিছু বিক্রি করে হলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’ উল্লেখ্য ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাসা থেকে হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন ডা. শামারুখের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম মেয়ের শাশুড়ি ডা. জেসমিন আরা, শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সাংসদ খান টিপু সুলতান (সম্প্রতি প্রয়াত) ও স্বামী হুমায়ুন সুলতান সাদাবের নামের মামলা করেন। রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী হুমায়ুন সাদাব গ্রেফতারও হন। পরে জামিনে মুক্ত হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। জানা যায়, প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ডা. শামারুখের আত্মহত্যা করেছে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে পুণঃময়নাতদন্ত করা হয়। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ডা.শামারুখের হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি। এরপর আদালতে নারাজি দেন বাদী। এরপর পুনঃতদন্তের আবেদন করে বাদী। কিন্তু নিন্ম আদালত আবেদন গ্রহণ করেনি। এরপর উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়। উচ্চ আদালত নারাজি গ্রহণ করেছে। শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। বাদী নুরুল ইসলাম বলেন, আমার যা কিছু আছে, বিক্রি করে হলেও মেয়ে হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে যাব। শামারুখ হত্যাকান্ডের অনেক প্রশ্নের জবাব আজও মেলেনি। তদন্ত কর্মকর্তাও সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেননি। যে বাড়িতে শামারুখ খুন হন, সেই বাড়ির সামনে গণস্বাস্থ্য হসপিটাল। সেখানে না নিয়ে শ্বাশুড়ির হসপিটাল সেন্ট্রাল রোডে নিয়ে যায়। বাড়ির কাছেই থানা। পুলিশ না নিয়ে কেন লাশ নামানো হল। তাছাড়া বাসার বাথরুমের উচ্চতা ছিল ৫ফুট ২ ইঞ্চি, সেখানে মাথা নিচু করতে ঢুকতে হত। সেখানে কিভাবে ৫ ফুট ৩ইঞ্চি উচ্চতার একটি মেয়ে কিভাবে ঝুলতে পারে? মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে এই সব অবস্থার কথা তুলে ধরেননি। নুরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আসামিদের বাড়ি একই গ্রামে। এছাড়াও আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায়, তাদের সঙ্গে সখ্যতা ছিল। এজন্য তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত হয়েছে। আদালত থেকে ১৬১ ধারার জবানবন্দির নথি গায়েবের ঘটনা ঘটেছে। নি¤œ আদালত ও উচ্চ আদালতের মধ্যে এ নিয়ে চিঠি চালাচালি চলছে।

আরো সংবাদ