রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ফেরি স্বল্পতা ও ঘাট সংকটের কারণে উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ সময় ঘাট এলাকায় আটকা পড়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রাকের চালকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। অপেক্ষমাণ এসব যানবাহনগুলোর মধ্যে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক বেশি রয়েছে।
অন্যদিকে ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে ফেরিঘাট থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পেছনে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে আহলাদিপুর জুট মিল পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকায় চার শতাধিক অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে।
জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাস ৩-৪ ঘণ্টা পর ফেরির নাগাল পেলেও অপচনশীল পণ্যের গাড়িকে অন্তত ১৫-২০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তারপরও তারা ফেরির নাগাল পাচ্ছে না। দীর্ঘ সময় ঘাট এলাকায় আটকে থেকে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ট্রাকে বেনাপোল থেকে কাঠ নিয়ে এসেছেন চালক সোহেল রানা। তিনি বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় গোয়ালন্দ মোড় এলে ট্রাফিক পুলিশ আটকে দেয়। সারারাত গোয়ালন্দ মোড়েই ছিলাম। ভোরের দিকে পুলিশ ছেড়ে দিলে আবার ঘাট থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে পদ্মার মোড় এলাকায় এসে আবারও সিরিয়ালে পড়ি। বেলা ১১টায় ঘাট থেকে দুই কিলোমিটার দূরে আছি। ফেরির নাগাল পেতে এখনও ঘণ্টা তিনেক লাগবে বলে মনে হচ্ছে।
ফরিদপুর থেকে পাট নিয়ে এসেছেন হেলাল শেখ। তিনি বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়ালে বসে আছি। ফেরি ঠিকমতো চলে না। এতে করে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এভাবে আর কত দিন?
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কাছে আটকে থাকা দিগন্ত পরিবহনের যাত্রী জোহরা বেগম বলেন, প্রায় ৪ ঘণ্টা এখানে আটকে আছি। প্রচণ্ড গরম ও রোদে বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে। এখনও দেড়শো গাড়ির পেছনে আছি। ফেরির নাগাল কখন পাব বলতে পারছি না।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক তারক পাল বলেন, ফেরি ও ঘাট স্বল্পতার কারণে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে গোয়ালন্দ মোড়ে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আটকে দিচ্ছি। ঘাট বাড়লে যানজট থাকবে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ২০টি ফেরির মধ্যে ১৯টি ফেরি সচল রয়েছে। একটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পাটুরিয়াতে ভাসমান কারখানায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘাট বাড়লে যানজট নিরসন করা সম্ভব। ৩ নং ফেরিঘাটে বড় রো রো ফেরির পন্টুন করলে চারটি পকেট বাড়বে।একসঙ্গে চারটি ফেরি তখন ভিড়তে পারবে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।