আজ - রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শরৎকাল), সময় - সকাল ১০:১১

নড়াইলে দাফন সেই ছোট্ট তিশার- ধর্ষক শামিম যে কোন সময় আটক : যশোর পুলিশ।

মুনতাসির মামুন,যশোর: নড়াইল জেলার ভাটিয়াগ্রামের তরিকুল ইসলাম বছর তিনেক আগে স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান তিশা কে নিয়ে পাড়ি জমান যশোরের ধর্মতলা খ্রীষ্টান পাড়া এলাকায়। সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে অজপাড়া গাঁ ছেড়ে স্বপ্নের জাল বুনেন যশোরের মাটিতে। তিশার বয়স তখন মাত্র পাঁচ। ভর্তি করেন কারবালা সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ে। যশোর আসার পর তরিকুলের ঘর আলো করে জন্ম হয় আরেক কন্যা সন্তানের। পেশা হিসেবে ইজিবাইক বেঁছে নেন তিনি। দুই শিশুর কোলাহলে বেশ দিন কাঁটছিলো তরিকুল দম্পতির। এত সুখ কপালে সইল নাহ্ তরিকুলের।
প্রতিবেশি ভাড়াটিয়া শামিম (২৭) এর কু-নজর পড়ে তরিকুলের বড় মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ৭ বছরের শিশু তিশার উপর। গত রোববার বিকাল ৫ টার দিকে মক্তব পড়ে বাড়ী ফেরে তিশা তারপর খেলতে বেরিয়ে পড়ে, এই বেরিয়ে পড়া’ই যেন ছিলো তিশার না ফেরার পূর্ভাবাস। লালসার তাক করা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ভেদ করতে পারেনি ছোট্ট শিশু তিশা। তারপর উধাও তিশা! কত খোঁজাখুঁজি, মাইকিং কিন্তু সে মাইকের ধ্বনি ধর্ষক শামিমের কান ভেদ করলেও হয়ত তিশার নিথর দেহ সে শব্দ টের পায়নি।

নিহত তিশা।

অবুঝ শিশুটি জানেও না কেন তাঁকে হত্যা করা হলো! কি তাঁর অপরাধ। কেন তাঁকে নৃশংস ভাবে হাত পা বেঁধে মাটিতে পুঁতে দিলো। কেন মর্গে তাঁর কোমল দেহ ধারালো ছুরি কাঁচি দিয়ে ব্যবচ্ছেদ করা হল। হয়ত কিছুই জানেনা শিশুটি হয়ত সে এটাও বোঝেনি তাঁর সাথে ঠিক কি ঘটেছিলো।

আজ মঙ্গলবার বাদ আসর যশোরের ধর্মতলা মোড়ে শিশু তিশার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ী নড়াইলের ভাটগ্রামে। সেখানে এশা বাদ দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবে ছোট্ট শিশু তিশা।

ধর্মতলায় তিশার ১ম জানাজা।

তিশা হত্যার প্রতিবাদে ধর্মতলায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা প্রায় দেড় ঘন্টা তাঁরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। মানববন্ধন থেকে তিশার হত্যাকারী নরপিশাচ শামিম কে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ক্রসফায়ারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে আরবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম ও কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি অপূর্ব হাসানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে রাস্তা ছাঁড়েন মানববন্ধন কারীরা।

মানববন্ধন।

তিশার ময়নাতদন্তে ধর্ষনের আলামত মিলেছে এবং যে লুঙ্গি ছিড়ে তিশার হাত পা বেঁধে হত্যা করা হয়েছিলো সেই লুঙ্গির বাকী অংশ উদ্ধার করে নিশ্চিত হওয়া গেছে লুঙ্গিটি ধর্ষক ও হত্যাকারী নরপিশাচ শামিমের। শামিমের বিরূদ্ধে ইতিপূর্বে যৌন হয়রানি, অস্ত্র, মাদক সেবন ও ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।

গতকালের সংবাদ টি পড়ুন

যোগাযোগ করা হলে আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম পুলিশের বরাত দিয়ে বলেন, এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ওসি সাহেব আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। যে কোন সময় ঘাতক শামিম কে আটক করা হবে। শামিম ইতিমধ্যে পুলিশের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। তাঁর সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা থাকলে তাঁদের অবস্থান কোথায় সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শাহারুল ইসলাম আরোও বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমিও আমার জনগণের সাথে সহমত পোষণ করে বলতে চাই। ইসলামি শরিয়া মোতাবেক তাঁর বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। আমি চাই জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাকে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হোক।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত