আজ - শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি, (বর্ষাকাল), সময় - দুপুর ২:৪৩

যশোরে এমএসটিপি স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ!

যশোর প্রতিনিধি: যশোর মধুসূদন তারাপ্রসন্ন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের (এমএসটিপি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে।

শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তড়িঘড়ি করে ওই শিক্ষককে সতর্কীকরণ নোটিশ দিয়ে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে অভিযোগ ওঠেছে ওই শিক্ষককে বাঁচাতে অধ্যক্ষ নিজেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বলেছেন, কারও কোনও অভিযোগ থাকলে সরাসরি অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে। বাইরের কারও সঙ্গে কেউ যেন কোনও কথা না বলেন।

অভিযোগে জানা গেছে, মধুসূদন তারাপ্রসন্ন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের (এমএসটিপি) গণিত বিষয়ের শিক্ষক আব্দুল খালেক শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। অনেক সময় শিক্ষার্থীদেরকে শ্লীলতাহানীর ঘটনাও ঘটান। পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখান। যে কারণে ছাত্রীরা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না।

আব্দুল খালেকের আচরণে শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে গত তিন এপ্রিল অধ্যক্ষ খায়রুল আনামের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে আগেও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ছিল। তাকে সতর্ক করাও হয়েছিল। কিন্তু তিনি সংশোধন হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ফলে বাধ্য হয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন।

অভিযোগ পাওয়ার পর শিক্ষক আব্দুল খালেককে রক্ষা করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন অধ্যক্ষ খায়রুল আনাম। তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নানারকম ছালচাতুরির আশ্রয় নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে গেলে গত ২৩ এপ্রিল শিক্ষক আব্দুল খালেককে সতর্কীকরণ একটি নোটিশ দিয়ে দায় সারেন অধ্যক্ষ।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। কখনও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল খালেককে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তার কিছুই হবে না। তবে তিনি যেন কারও সঙ্গে কোনও কথা না বলেন। আর শিক্ষকদের বলেছেন, তারা যেন গণমাধ্যমের সামনে কথা না বলেন। এ ব্যাপারে গেল ২২ এপ্রিল কথা হয় কলেজের অধ্যক্ষ খায়রুল আনামের সঙ্গে।

তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর ছয়জন শিক্ষককে দিয়ে তদন্ত করেছি। স্কুলের সভাপতি এমপি সাহেব (কাজী নাবিল আহমেদ) তার কাছে আমরা রিপোর্ট জমা দেব।

এরপর গেল ২৪ এপ্রিল ক্যামেরা নিয়ে অধ্যক্ষর বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য কলেজে গেলে অধ্যক্ষ সতর্কীকরণের নোটিশ এ প্রতিবেদককে দেখান। তিনি বলেন, আমি ক্যামেরার সামনে কোনও বক্তব্য দেব না। আপনারা যা খুশি তাই লেখন।

শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি ম্যাসেজ পাঠিয়েও তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।

আরো সংবাদ