আজ - বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শরৎকাল), সময় - রাত ১:৩৭

​ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যার দায় বুধোর ঘাড়ে – সন্ত্রাসী ম্যানসেলকে রক্ষায় রাজপথে এমপি নাবিল!

নাঈম সাব্বির,( স্পেশাল করসপন্ডেন্ট পলিটিক্স) যশোর থেকে: সম্প্রতি যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ইমন হত্যাকান্ড ঘটনার পর, পুলিশ যশোরের ষষ্টিতলা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের খোঁজে আটক অভিযান শুরু করে। পুলিশ ও স্থানীয় জনগণের তথ্য মতে মাদক ব্যাবসার বিরূদ্ধে অবস্থান নেয়ায় খুন হন ইমন। তাই মামলা না হলেও মাদক ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রনকারীদের প্রাথমিক সন্দেহের তালিকায় রেখে আটক অভিযানে নামে পুলিশ। শোকে কাতর  ইমনের বাবা আনোয়ার হোসেন শোক সামলে আজ মঙ্গলবার কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্থানীয়রা জানান শনিবার অর্থাৎ ইমন হত্যারদিন বেজপাড়া গোলগোল্লার মোড় এলাকায় সন্ত্রাসী ম্যানসেল সহ ৮/১০ জন অপরিচিত মুখের আনাগোনা হয়, যার সমাপ্তি ইমন হত্যার মধ্যদিয়ে। 

পরদিন যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল এ হত্যার জন্য সদর উপজেলা আ’লীগ সভাপতি মোহিত কুমার নাথ ও ছাত্রদল নেতা ও শহর যুবলীগের আহ্বায়ক বর্তমানে এমপি নাবিলের আশ্রিত সন্ত্রাসী মেহবুব আলম ম্যানসেল কে দায়ী করেন। কেননা ঐ এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রন করেন মোহিত কুমার নাথ ও সন্ত্রাসী ম্যানসেল বাহীনি এবং ইমন তাদেরই বিরোধী ছিলো। 

কাজী নাবিল আহম্মেদ, মোহিত কুমার নাথ ও ম্যানসেলের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ।

অন্যদিকে আজ মঙ্গলবার কাজী নাবিল আহম্মেদ, মোহিত কুমার নাথ ও ম্যানসেলের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে এমপি নাবিল সমর্থকরা। এ সময় দারুন বিব্রতকর পরিবেশ বিরাজ করতে থাকে সাধারন মানুষের মনে! কেননা শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেলের নামে হত্যা, অস্ত্র, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ অর্ধডজন মামলা রয়েছে। এরমধ্যে শংকরপুরের হৃদয় ও হাঁস সোহেল হত্যা অন্যতম।
২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ কর্তৃক দায়েরকৃত সন্ত্রাসী ম্যানসেলের বিরূদ্ধে ডাকাতি চেষ্টা মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিক্ষোভ করে জেলা ছাত্রলীগ। তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন’কোনো পদে না থাকলেও ম্যানসেল শহর ছাত্রলীগ নেতা। আর ম্যানসেল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়েছে।
সে সময় তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন প্রায় এক যুগ সেখানে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। তিনি বলেন, ম্যানসেল শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতি করেন। এছাড়া ম্যানসেলের নামে হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। এ ধরনের সন্ত্রাসীর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর ঝাউদিয়ার আ’লীগ কর্মী শহিদুল খুনে, মোহিত নাথ ও দাউদ হোসেন কে দায়ী করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় স্থানীয়রা। শহিদুল হত্যা মামলা দেখভাল করছিলো তার ভাই এজাজ পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১১ অক্টোবর এজাজ কে গুলি করে হত্যা করা হলেও মোহিত নাথ এবং দাউদের ঘাঁড়ে দায় চাপে। পরবর্তীতে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে মোহিত কুমার নাথ ও দাউদ হোসেনের সমর্থক মোস্ত, সবুজ, আবুল কালাম, ইকবাল হোসেন, ইউনুস আলী এদের নাম উঠে আসে। সর্বশেষ ইমন হত্যার দায় চেপেছে মোহিত নাথ ও ম্যানসেলের কাঁধে। এমপির আশ্রয়ে থাকার সুবাদে বাকী ঘটনার পত পার পেয়ে যাবেন মোহিত, ম্যানসেল বলছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার কাজী নাবিল আহম্মেদ, মোহিত কুমার নাথ ও ম্যানসেলের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিল সম্পর্কে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী বলেন ম্যানসেল কোনদিন ছাত্রলীগ নেতা ছিলোনা। তিনি আরও বলেন ইমনের জনাজা ও মিলাদেও অংশ গ্রহন করেনি এমপি নাবিল, মোহিত নাথ, ম্যানসেল সহ নাবিল সমর্থকরা। তবে মাদক কারবারীর সাথে জড়িতরাই এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলেন রওশন ইকবাল শাহী। 

আরো সংবাদ