আজ - রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শরৎকাল), সময় - সকাল ১১:০৮

​পাকিস্তান হাইকমিশনের ধৃষ্টতা (উপ সম্পাদকীয়) 

এ অপপ্রচার জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে ঢাকায় বসেই অপপ্রচার চালাচ্ছে পাকিস্তান। ‘পাকিস্তান অ্যাফেয়ার্স’ নামের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ১৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান হাইকমিশন তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে।

ওই ভিডিওতে দাবি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নন, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষক। ভিডিওতে আবিষ্কার করা হয় শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাই চাননি, তিনি স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে দখলদার পাকিস্তানিরা অবতীর্ণ হয়েছিল ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যায়। জ্বালাও-পোড়াও আর নারীর সম্ভ্রমহানির নৃশংসতায় মেতেছিল দখলদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা। পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্কিত করা হয়েছে। স্মর্তব্য, ২০০৯ সালের ২১ জুন বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদের হাই কোর্ট বেঞ্চ এক ঐতিহাসিক রায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে রায় দেন। আদালত জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উপস্থাপন করে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র’-এর তৃতীয় খণ্ড বাতিল ঘোষণা করেন এবং তা দেশ-বিদেশের সব স্থান থেকে বাজেয়াপ্ত ও প্রত্যাহার করারও নির্দেশ দেন। আদালতের রায়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আদালত বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের লেখা ‘এরা অব শেখ মুজিব’ গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন।
জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ ১৯৭২ সালের লেখায় ২৫ মার্চের বর্ণনা দেন এবং ১৯৭৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার ভাষণে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ সম্পর্কে বলার সময়ও নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেননি। হাইকমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুকে কোনো কিছু প্রকাশ করার অর্থ তারা দায়িত্ব নিয়েই তা প্রচার করছেন। পাকিস্তান হাইকমিশন ঢাকায় বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা ভিয়েনা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।   সার্কভুক্ত দুই দেশের সুসম্পর্কের খাতিরে পাকিস্তান এ ধরনের নোংরা খেলা বন্ধ করবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত