সিফাতুর রহমান: রিকশা চালক থেকে গায়ক হয়ে আলোচিত সেই আকবরের কথা মনে আছে? হানিফ সংকেতের ইত্যাদির মাধ্যমে যার আবিস্কার। কিশোর কুমারের গাওয়া ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি ইত্যাদির মঞ্চে গেয়ে ১৫ বছর আগে মন জয় করেছিলেন শ্রোতাদের। এরপরই রাতারাতি পরিবর্তন আসে তার জীবনে। হয়ে উঠেন তারকা। সেই আকবরই এখন অসুস্থ হয়ে বিছানায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
পেশায় রিকশাচালক থেকে গায়ক হওয়ার পর ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি প্রকাশ হয় তার। এ গানটিও জনপ্রিয়তা পায় শ্রোতামহলে। হঠাৎ করেই কিডনির অসুখে আক্রান্ত হন এ গায়ক। ডায়াবেটিসও দেখা দেয়। হুট করেই তাই থমকে যায় তার চলার গতি। কারণ সংসারে সেই অর্থ উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি। জীবনের এ কঠিন সময়েও তাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তার আবিষ্কারক হানিফ সংকেত।
হানিফ সংকেতের সহায়তায় শুরু হয় তার চিকিৎসা। কিছুটা সুস্থও হন। কিন্তু ছন্দ পতনের জীবনে নতুন করে ছন্দ ফিরে পাওয়ার আগেই আক্রমণ করে বসে পুরনো অসুখ।
বর্তমানে মিরপুর ১৩ নম্বরে ভাড়া বাড়িতে বিছানায় শুয়েই দিন কাটছে তার। ঠিকমতো চলাফেরা করতেও কষ্ট হচ্ছে তার। তাই আর গান গাওয়া হচ্ছেনা শিল্পীর।
আজ খানজাহান আলী 24/7 নিউজের সঙ্গে কথা হয় তার। আকবর বলেন, একবারে ঘরে পড়ে গেছি। কিছুই করতে পারছি না। যা সঞ্চয় ছিল সবই অসুখের পিছনে শেষ করেছি। কয়েক দফায় হানিফ সংকেত স্যার সাহায্য করেছেন। তার টাকা দিয়েই চিকিৎসা চালিয়েছি। তিনি তো আমার জন্য অনেক করলেন, আর কত করবেন? তবুও এখনও তিনি আমার পাশে রয়েছেন। সাহায্য করছেন। তার মতো মানুষ হয়না।
আকবর আরও বলেন, ‘ নানা ধরনের অসুখ শরীরে। কিডনিতে বড় ধরনের ঝামেলা হয়েছে। রক্তেও রয়েছে ইনফেকশন। আগে থেকেই ডায়াবেটিস। এখন শরীর নাড়াতে পারছি না। ব্যাথায় কুকড়ে উঠছি। এখন সংসারের করুণ দশা। স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাকে নিয়ে কোনোমতে দিন পার করছি। আমি তো রাস্তা থেকে উঠে আসা গায়ক। আমার বড় কোনো আত্মীয় স্বজনও নেই। আমার বড় আত্মীয় বলতে এক হানিফ সংকেত স্যারই। কে আমার সাহায্যে এগিয়ে আসবে। আমি তো বড় কোন শিল্পীও নই যে সকারের কাছে সাহায্যের জন্য যাবে।’
তবে এই মুহুর্তে কোন সাহায্য না পেলে নিজে মরবেন অসুখে। আর স্ত্রী-সন্তান মরবেন না খেয়ে এমন মন্তব্যই করেন আকবর।