আজ - শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৭:১৬

এখন সারা বাংলায় এশার জয়ধ্বনি- সোহাগ জাকির কে ধিক্কার!

নাঈম নিজাম (ঢাবি প্রতিনিধি): দল থেকে বহিষ্কৃত ইফফাত জাহান এশার গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে দিয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা। বৃহস্পতিবার এমন কিছু ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওই ছবিতে ছাত্রলীগ নেতা হাসানুজ্জামান তারেক, জয়দেব নন্দী, শারমিন সুলতানা লিলিকে  দেখা যায়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জয়দেব নন্দী সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তার ফেসবুক টাইমলাইনে ফুলের মালা সম্বলিত এশার ছবি আর ক্যাপশনে ছিলো   ‘এশার পাশে আমরা সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ’ ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন ও এক ছাত্রীর পায়ের রগ কাটার খবর ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। অভিযোগ ওঠার পরপরই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হন এশা।

এরপর থেকেই এশাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয় । বিভিন্ন শ্রেণী মানুষের মধ্যে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয় ।

গত মঙ্গলবার রাতে ওই ছাত্রীর যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে- ওই ভিডিওটিতে স্পষ্ট শোনা গেছে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলছেন ‘আমি এ কি করলাম!’ তবে আহত ওই শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এশার সহপাঠীরা  বলেন, এশার ক্ষেত্রে যা হয়েছে তা দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। ছাত্রলীগ নেত্রী হয়ে কিছুটা বিরূপ মনোভাব দেখাতেন এশা। এশার প্রতিপক্ষরা জুতার মালা পরানোর সময় রুমের বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। এসময় এশাকে শারীরিকভাবে নিগৃহীত করা হয় । এনিয়ে বুধবার রাত থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এশার প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি হয় ।  তাছাড়া অনেকেই এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেন । এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদককে অযোগ্য অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন অনেকে তাদের কে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েও স্ট্যাটাস দিয়েছেন খোদ সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা।

প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন তার ফেসবুক সময় রেখায় এশার এ পরিণতি মানতে পারেননি

জেগে উঠা উচিত, যাদের মধ্যে মনুষত্ব আছে …

মেয়েটিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। এই মেয়েটিই হতে পারতো আমার বোন। ভিডিওটাও পুরোপুরি দেখার মতো শক্তি নিজের মধ্যে ছিল না। মনে হয়েছে আমার চোখের সামনে কিছু হায়েনা আমার বোনকে লাঞ্চিত করছে। ভাইয়ের অসহায়ত্ব দেখে বোনটি শুধু করুন চোখে সব নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছে। এই বুক ফাটা কষ্টে অজান্তেই চোখ ভিজে গিয়েছে। শুধু ভেবেছি, মানুষ এতো অমানুষ হয় কি করে।এরপর আবার দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাকি শিক্ষার্থী ওরা। মেয়েটির পাশের দুইজন পুরুষ শিক্ষককে দেখে মনে হয়েছে হায়েনাগুলোর সামনে যেন আত্মসমর্পণকারি নির্লিপ্ত অসহায় পিতা। হায়েনাগুলো যা করে করুক, শুধু নিজের সন্তানকে যেকোনো অবস্থায় জীবিত অবস্থায় ফেরত চাইছেন তারা।

আমি এখনো বিশ্বাস করি কোটা বিরুদ্ধে আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সাধারণ ছাত্রীরা এর সঙ্গে জড়িত নয়। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে মিশে গিয়ে সুযোগ নিয়েছে কিছু বর্বর শ্রেণীর মেয়ে। যেমনটা করেছে উপাচার্যের বাসভবনে। আক্রমণকারী হায়েনা সদৃশ্য মেয়েগুলোর জন্ম পরিচয়, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড খুঁজতে যাবোনা। ওনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে হয়তো মেধাবী কোথায়, আমি নিশ্চিত “মানুষ কোঠা’র বিধান থাকলে তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দা দিয়ে হাঁটার যোগ্যতা অর্জন করতে পারতো না।

সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইফ্ফাত জাহান এশা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ সে একজন ছাত্রীর পায়ের রগ্ কেটে দিয়েছে। যা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ । কারণ ওই মেয়েটি নিজেই ফেসবুকে জবানবন্দিতে বলেছে, রুমের জানালায় লাথি দিয়ে সে তার পা কেটে ফেলেছে। যেই অপরাধ এশা করেনি সেই অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মেয়েটিকে সবাই মিলে মেরেছে, গলায় জুতার মালা দিয়েছে। কত জগন্য ওদের মানসিকতা। সমাজের নিম্নস্তরেও এই যুগে এইরকম ঘটনা দেখা যায় না। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগকে জিম্মি করে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বহিষ্কার করানো হয়েছে।

অনেকেই লিখেছেন নারীবাদীরা এখন কোথায়, তাদের বিবেক কি মরে গেছে? আমি বলি, শুধু নারীবাদী কেন প্রত্যেকটি মানুষের জেগে উঠা উচিত, যাদের মধ্যে মনুষত্ব আছে। 

এছাড়াও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দপ্তর উপকমিটির সদস্য দেলোয়ার রহমান দিপু এশার এ পরিণতির জন্য তীব্র ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন

ক্ষমা করিস এশা!!!

আমার যেখানে ঋণ ছিল ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষার, সুযোগ ছিল নায়কোচিত ভূমিকার ;আমি সেখানে প্রাণের প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করেছি রড আর লাঠির মহড়ায়!যারা আমার অনুজপ্রতীম ছিল মিছিলের সম্মুখ সারিতে তাদেরকে রাজাকার অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে লাঠিপেটায় বিতাড়িত করে নেতৃত্বের জায়গা করে দিয়েছি প্রকৃত স্বাধীনতাবিরোধীর।আমি জানি আমার নির্দেশনার কোথায় অসারতা ছিল। তাই যখন দেখলাম ভরা হাটের বিশাল জনসমাগমে আব্বাকে সবাই জুতোর মালা গলায় দিয়ে উল্লাস করছে তখন দৌড়ে পালিয়ে এসে নিজের সম্মান বাঁচালাম! এতে আমার কোন লজ্জাবোধ নেই,যদি তা থাকতো তাহলে কি অপমান আর গ্লানি ভুলে আমার পাপে তোকে শাস্তি দিতাম? বেহায়ার মতো তোর জীবনকে অন্ধকারে ছুঁড়ে দিয়ে অন্যের বিজয়ের মিছিল অপহরণ করতাম?
আমি যতই নিজের ঢোল নিজে পিটিয়ে বলি ইতিহাস সেরা আমি সফলতায়,তবু জাতি জেনে গেছে অভূতপূর্ব আমি ইতিহসে অযোগ্যতায়।জুতার মালার কলঙ্ক সে তো তোর- ই একার! আমি সহ আমার অনুগামী যত তাতে কিবা কার আসে যায়?

“আমি চিৎকার করিয়া কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার”
বেহায়া নির্লজ্জ আমি,পাপিষ্ঠ আমি দুরাচার।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত