আজ - বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - সকাল ৬:১৯

এমপি সাহেবের আশির্বাদে শহীদ এখন মাদক সন্ত্রাসের বিশাল গড ফাদার !

মুনতাসির মামুন : যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিদুজ্জামান শহীদ ওরফে চিটার শহীদ এখন সন্ত্রাসীদের গড ফাদার। প্রতারণা, মাদক, সন্ত্রাসের পৃষ্টপোষক হিসেবে ইতমধ্যে এলাকায় পরিচিতি থাকলেও নব্য গড ফাদার হিসিবে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন তিঁনি।নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ীতে বোমা হামলা মারধর লুটপাটের মাধ্যমে প্রায়‘ই নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তিঁনি।


এই প্রোগ্রামে ডেকে আনা হয় রাসেল কে । লাল বৃত্তে রাসেল

গেল ১৭ ই আগস্ট বড় ভেকুটিয়া বাজারে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শাহিদুজ্জামান  শহীদ কর্তৃক আয়োজিত মানবভোজ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদক সাব্বির আহমেদ রাসেল (২৫) ও তাঁর বাবা ছালেক আহমেদ (৪৫) কে  ডেকে এনে বেধড়ক মারপিট করে সন্ত্রাসী পিচ্চি বাবু, শামিরুল, জনি, সাগর,রনি, সাব্বির,ফরিদ,প্রিন্স সহ ৭/৮ জন সন্ত্রাসী বাহীনি। উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর সদর ৩ আসনের সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ।

আক্রমনের শিকার বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদক সাব্বির আহমেদ রাসেল বলেন, আমি ১২ ই জুনের পর থেকে বিশেষ কারনে এলাকাভিত্তিক রাজনীতি থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলাম এবং শাহিদুজ্জামান  শহীদের সাথেও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলাম।এর আগে তাঁর সাথে আমার সক্রিয় অবস্থান এবং চলাচল ছিল।মাদক সন্ত্রাস এগুলো আমি সহ্য করতে পারিনা মূলত  সে কারনেই তাঁর সাথে আমার দূরত্ব বাঁড়তে থাকে।শহীদ যাদের পৃষ্টপোষকতা করছেন তাঁরা প্রত্যেকেই মাদক সন্ত্রাসের সাথে জড়িত। ঘটনার আগের দিন রাতে অর্থাৎ ১৬ই আগষ্ট রাতে শহীদ আমাকে ফোন করে প্রোগ্রামে আসতে বলেন এবং সাথে বেশি লোক আনতে নিষেধ করেন ।তিঁনি আমাকে ৪/৫ জন নিয়ে প্রোগ্রামে যেতে বলেন,কিন্তু এলাকা ভিত্তিক পরিবেশে আমি কাউকে নিষেধ করতে পারিনা সে কারনে প্রায় দেড় শতাধিক লোকজন আমার সাথে প্রোগামে আসেন। আমি মঞ্চে বক্তৃতাও করি। পরে খিঁচুড়ি বিতরনের সময় শহীদের ছেলে সোহেল আমাকে বলে ভাই বাইরে কারা যেন মারামারি করছে একটু আসেন। আমি বাইরে গিয়ে দেখি পিচ্চি বাবুরা মারামারি করছে আমি তাঁদের নিষেধ করি এবং শান্ত থাকতে বলি। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই  সন্ত্রাসী পিচ্চি বাবু, শামিরুল, জনি, সাগর,রনি, সাব্বিররা আমাকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে।পরে মুরুব্বিরা আমাকে উদ্ধার করে শহীদের অফিসের মধ্যে বসিয়ে রাখেন। এরপর শহীদ অফিসে আসলে এলাকার মুরুব্বিরা শহীদকে ঘটনার কথা জানাচ্ছিলেন এবং শহীদকে সতর্ক করছিলেন ঠিক এই মুহূর্তে শহীদের অফিসের ভেতরে শহীদের সামনেই আমাকে ২য় দফা মারধর শুরু করে ভেকুটিয়ার ফরিদ, পিচ্চি বাবু,শামিরুল, জনি, সাগর,রনি, সাব্বির,ও প্রিন্স। এসময় আমার বাবা ৬নংওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আবু ছালেককেও মারধর করে তাঁরা। কিন্তু শহীদ কোনও প্রতিবাদ করলনা।এরপর এলাকার মুরুব্বিদের সহায়তায় আমি ও আমার বাবা আমাদের বাড়ীতে (শ্মশানপাড়া) চলে আসি। আমার সাথে থাকা  বিপ্লব ও আজাদকে (এখনো এলাকা ছাঁড়া) শহীদের সন্ত্রাসী বাহীনি তাঁড়া করে তাঁদের ধরতে না পেরে বাঁশবাড়িয়ার মশিয়ার রহমানের ছেলে বিপ্লবের বাড়ীতে বোমা হামলা ভাংচুর করেছে, তাঁর বড় ভাই ও মা কে পিটিয়ে আহত করে পিচ্চি বাবু,শামিরুল, জনি, সাগর,রনি, সাব্বির,ও প্রিন্স।আজাদ এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি কোতয়ালী মডেল থানায় সন্ত্রাসী বাহীনি ফরিদ, পিচ্চি বাবু,শামিরুল, জনি, সাগর,রনি, সাব্বির,ও প্রিন্সদের নামোল্ল্যেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

আরও পড়ুন : আরবপুরে শহীদের নির্দেশে পিচ্চি বাবুর বোমা হামলা- বলির পাঠা রাসেল – জনি!

রাসেলের বাবা আবু সালেক জানান, আমি শহীদকে বারংবার সতর্ক করে বলেছি ফরিদ, পিচ্চি বাবু,শামিরুল, জনি, সাগর,রনি, সাব্বির, প্রিন্স এদের বাদ দাও। এরা সবাই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে ছিনতাই ডাকাতি অস্ত্রবাজী এগুলো করে বেড়াচ্ছে কিন্তু শহীদ শুণতোনা।কি কারনে আমাকে ও আমার ছেলেকে মারা হলো খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ২২ জুন বালিয়া ভেকুটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে শহীদের শোচনীয় পরাজয়ের কারন হিসেবে শহীদ আমাদের সন্দেহ করতো সে ভাবতো আমরা চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামের সাথে লবিং করে শহীদ কে ভোটে পরাজিত করিয়েছি। আদৌ চেয়ারম্যানের সাথে আমি ও আমার ছেলের কোন রাজনৈতিক কার্মকান্ড বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিলোনা।

শহীদ এখন গড ফাদার হিসেবে নিজের অবস্থান জানান দিতেই আমাদের উপর মারধর অত্যাচার চালাচ্ছে। সম্পূর্ণ  উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই সন্ত্রাসী বাহীনি দিয়ে আমাদের আক্রমণ করেছে  শহীদ ।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের এসআই হায়াৎ বলেন, আসামীরা কেউ আত্মসমর্পণ করেনি। গ্রেপ্তার অভিযানে কাউকে পাওয়া যায়নি তবে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সাংসদ নাবিল আহমেদ ও গডফাদার শহীদ

এ বিষয়ে সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিদুজ্জামান শহীদ কোন বিষয় অস্বীকার করেননি। তিঁনি বলেন সালেক ও রাসেল আমার লোক যাদের বিরূদ্ধে মামলা হয়েছে তারাও আমার লোক। আসেন চা খাই… আর কোনও বক্তব্য  দিতে রাজি হননি তিনি।

ঘটনার শুরু সেই ১২ই জুন গভীর রাতে।সে রাতে  মোবাইল ক্রয়বিক্রয় সংক্রান্ত একটি গোলযোগে বালিয়া ভেকুটিয়া উত্তর পাড়াস্থ ছাত্রলীগ কর্মী তাওহিদ আজিজ জনির বাড়ীতে বোমা হামলা মারধর ও ছিনতাই ঘটনা ঘটায় শহীদের পোষ্য সন্তান হিসেবে পরিচিত হুসাইন মাহবুব ওরফে সন্ত্রাসী পিচ্চি বাবু।কৌশলে সে ঘটনার দ্বায় বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদক সাব্বির আহমেদ রাসেলের উপর চাপানোর চেষ্টা করেন শহীদ কিন্তু পরে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।  বালিয়া ভেকুটিয়া উত্তরপাড়ার স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন , হামলায় অংশ নেয়া সন্ত্রাসীদের মধ্যে আমরা সাব্বির আহমেদ রাসেল কে দেখিনি।সে সময় সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্ববায়ক শাহিদুজ্জামান শহীদের পোষ্য সন্ত্রাসী হুসাইন মাহবুব ওরফে পিচ্চি বাবুকে একটি লাল মটর সাইকেল যোগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখেছি।আমরা ধারনা করছি রাসেল ও জনির বাকবিতন্ডার সুযোগ নিয়ে তৃতীয়পক্ষ হামলা চালিয়েছে।

(চলবে……)

আরো সংবাদ