আজ - শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - দুপুর ১:৪০

কেশবপুর পৌর নির্বাচনে শেষ মুহুর্তে বাড়ছে উত্তাপ

কেশবপুর প্রতিনিধি : কেশবপুর পৌরসভা নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ মূহুর্তে প্রার্থীদের গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণাকালে কয়েকটি অনাকাঙ্কিত ঘটনায় এ উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকজন প্রার্থী ইতিমধ্যে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর নামে উপজেলা রিটানিং অফিসারের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে করা হচ্ছে জরিমানা। তবে এবারই প্রথম কেশবপুরে ইভিএমে ভোট হবে বিধায় ভোটারদের মধ্যে দেখা দিয়েছে কৌতুহলের পাশাপাশি উৎসাহ।

এদিকে শহরসহ পৌরসভার রাস্তাঘাট, অলিগলি ও পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ এবং প্রচার-প্রচারণাসহ মিছিল-মিটিংয়ের মধ্য দিয়ে জমে উঠেছে নির্বাচন। শহরসহ পৌর এলাকার অলিগলি ছেয়ে গেছে নির্বাচনী পোস্টারে। চলছে প্রচার মাইকিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন সুরেলা কন্ঠে ভোটারদের আকৃষ্ট করে ভোট প্রার্থনাও। পৌর শহরের সর্বত্রই এখন নির্বাচনকে ঘিরে মুখরোচক আলোচনা হচ্ছে। প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভোট চেয়ে তাদের নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। তবে এখনও পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও সমর্থিত প্রার্থীরা। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকায় কৌশলে আগাচ্ছেন বিএনপির প্রার্থীরা। এদিকে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হয়ে আছেন নিরব।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর পৌরসভা নির্বাচনে ৩ পদে ৫৪ প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৩ প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত রফিকুল ইসলাম নৌকা, বিএনপির মনোনীত আব্দুস সামাদ বিশ্বাস ধানের শীষ এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত আব্দুল কাদের হাতাপাখা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন পুরুষ ও সংরক্ষিত আসনে ১৩ জন নারী প্রার্থী রয়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র রফিকুল ইসলামের পক্ষে তার কর্মী ও সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকার প্রধান প্রধান মোড়ে পথসভা, এলাকায় উঠান বৈঠাক, গণসংযোগসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করে চলেছেন। এছাড়া নৌকা প্রতীকের প্রতিটি নির্বাচনী কার্যালয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সরব উপস্থিতি।

এদিকে, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস পুনরায় বিজয়ী হতে কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ এবং ভোট প্রার্থনা করছেন। থানার মোড় সংলগ্ন বিএনপি অফিসের পাশে ধানের শীষ প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় ব্যতীত আর কোন অফিসের তথ্য পাওয়া যায়নি। এ কারণে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকায় এবারের নির্বাচনে বিএনপি কৌশলে আগাচ্ছেন। ইভিএমে ভোট হওয়ায় ভোটাররা ঠিকভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বীতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের আব্দুল কাদেরের পক্ষে দেখা যায়নি তেমন কোন প্রচার-প্রচারণা কিংবা গণসংযোগ। তবে তিনি শহরের মাইকেল মোড়ে সংগঠনের কার্যালয়ে নির্বাচনী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডের পুরুষ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রচারপত্র বিতরণ করে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা অব্যাহত রেখেছেন। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে অনেকটাই বিপাকে রয়েছেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ৬ কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১ জন কর্মীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাবলে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

উপজেলা রিটানিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫টি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২ মেয়র ও ৩ কাউন্সিলর প্রার্থীর অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার বজলুর রশিদ জানান, কেশবপুর পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ২০৮ জন ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ১০ হাজার ৫৬৭ জন। ১০টি ভোট কেন্দ্রের ৬৩টি কক্ষে পঞ্চম ধাপের এ নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

আরো সংবাদ