খান জাহান আলী24/7 নিউজ :: ডিবি পুলিশের কড়া নজরদারিতে থাকা যশোরের মনিরামপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির চাল কালোবাজারির মামলায় যে কোন সময় আটকও হতে পারেন। সেই সাথে যুবলীগ কর্মী কুদ্দুসকে আটকের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিবি পুলিশ।
এরই মধ্যে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু গ্রেফতার হয়েছেন এমন গুঞ্জন উঠেছে।
কাবিখা’র ৫৫৫ বস্তা চাল কালোবাজারির ঘটনায় জড়িত এ দুজন যুবলীগ নেতা।
আদালতে পুলিশের অভিযানে আটক শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির দেয়া জবানবন্দিতে মনিরামপুর উপজেলা যুবলীগের দুজনের নাম প্রকাশ পেয়েছে।
এবছর ৪ এপ্রিল বিকেলে মনিরামপুর থানা পুলিশের এসআই তপন কুমার সিংহ উপজেলার বিজয়রামপুরের ভাই ভাই রাইস মিল অ্যান্ড চাতালে অভিযান চালিয়ে সরকারের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির ৫৫৫ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। এ সময় মিল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ফরিদ হাওলাদার নামে একজন ট্রাকচালককে আটক করা হয়। ফরিদ হাওলাদার খুলনার দৌলতপুর থানার সাহেবপাড়ার রতন হাওলাদারের ছেলে। এ ঘটনায় এসআই তপন কুমার সিংহ সেই সময় আটক দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(১)/২৫-ডি ধারায় সংঘবদ্ধ চক্র কালোবাজারির উদ্দেশে মজুদ ও সহায়তার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। পরে আটক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ফরিদ হাওলাদারকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তাদের জবানবন্দি থেকে প্রকাশ পায় যে, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির চাল কালোবাজারির সাথে শহিদুল ইসলাম ও জগদীশ দাস নামে আরও দুই ব্যক্তি জড়িত। পরে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ জবানবন্দিতে প্রকাশ পাওয়া শহিদুল ইসলামকে আটক করে। তিনি উপজেলার তাহেরপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মোড়লের ছেলে। গত ১৫ মে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনিও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মূলত তার জবানবন্দি থেকে প্রকাশ পায়, সরকারি এই চাল বিক্রির সাথে মনিরামপুর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু এবং কুদ্দুস নামে একজন যুবলীগ কর্মী জড়িত। উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু উপজেলা যুবলীগের আহবায়কও। তিনি সরকারি এই চাল ভাই ভাই রাইস মিল অ্যান্ড চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে বিক্রি করেছিলেন। এরপর ডিবি পুলিশ জগদীশ দাসকেও আটক করে। তার বাড়ি মনিরামপুর উপজেলার জুড়ানপুর গ্রামে। তিনিও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবনবন্দিতে তিনি বলেছেন, গত ৩০ মার্চ উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু নিজে আব্দুল্লাহ আল মামুনের চাতালে গিয়ে চাল বিক্রির টাকা নিয়ে আসেন। ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সরকারি চাল কালোবাজারির মামলায় আটক শহিদুল ইসলাম ও জগদীশ দাসের দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দি থেকে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও কুদ্দুস নামে আরও একজনের নাম প্রকাশ পেয়েছে। এ দুজন ডিবি পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন। তাদেরকে আটকের প্রক্রিয়া চলছে।
ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মদ সাংবাদিকদের জানান, তাদেরকেও (উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও কুদ্দুস) আইনের আওতায় আনা হবে।