টাঙ্গাইলের পাটকল শ্রমিক জাহালমকে আসামি করে ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলার ১১ তদন্ত কর্মকর্তার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। কী কারণে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে তা ২৮ আগস্টের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।
গত ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চেয়েছিলেন আদালত। সে অনুসারে দুদকের পরিচালক (লিগ্যাল) এবং এ-সংক্রান্ত দুদকের তদন্ত কমিটির প্রধান আবুল হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদের দেওয়া প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।
তবে ওই ১১ কর্মকর্তার নাম, পরিচয় ইত্যাদি পূর্ণাঙ্গভাবে উল্লেখ না করায় প্রতিবেদনটির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই ১১ আসামির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য তুলে ধরে পুনরায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৮ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আবুল হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদ প্রতিবেদনে বলেন, সার্বিক বিবেচনায় আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, জাহালমকে আবু সালেকরূপে চিহ্নিত করার যে ভুলটি হয়েছে তা দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কারণেই ঘটেছে। আর তাদের ভুল পথে চালিত করতে সহায়তা করেছেন ব্র্যাক ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা ও অ্যাকাউন্টের ভুয়া ব্যক্তিকে পরিচয়দানকারীরা। তবে সঠিক ঘটনা তথা সত্য উদ্ঘাটন করে আদালতের কাছে তা উপস্থাপন করাটাই তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কী সিদ্ধান্ত নেবে তা দেখতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে খুরশীদ আলম খান জানান, আদালতের এ নির্দেশনা মোতাবেক একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আদালতকে দেখানো হয়েছে, ১১ জন তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। তারা এর জবাব দিয়েছেন। দুদক তাদের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে। আর এই ঋণ জালিয়াতির ৩৩টি মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তখন আদালত জানতে চেয়েছেন এই ১১ জন কারা, তাদের বিরুদ্ধে কী কারণে মামলা করা হয়েছে, তা আগামী বুধবারের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে।