আজ - শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:১৯

টেকনাফে সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৬ ডিবি পুলিশ!

 টেকনাফে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের ৬ সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এসময় উদ্ধার করা হয় অপহৃত ব্যবসায়ীকেও।



টেকনাফ সাবরাং সেনাক্যাম্পের ইনচার্জ মেজর নাজিম জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টেকনাফ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই, গফুর আলমকে কক্সবাজার থেকে অপহরণ করে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।

এরপর তাকে মেরিনড্রাইভে আটকে রেখে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করে তারা। বুধবার ভোরে মেরিনড্রাইভ থেকে তাদের আটকের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী গফুর আলম বলেন, ‘আমি চায়না মিয়ানমার থেকে আমদানি করি। কালকে সকালে আমরা ইনকাম ট্যাক্স দেওয়ার জন্য গেছিলাম। উকিলের বাসাতে পৌছানোর পর যখন সেই বাসা থেকে বের হয়েছি। তখন আমি হোটেলে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে খাওয়ার পর নিচে এসে দাঁড়িয়েছি। ৬-৭ জন লোক আমার নাম জানতে চাইলে নাম বলার পর আমাকে ধরে নিয়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন ‘আমাকে কোথায় নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে বলে কোনো অসুবিধা হবে না। আমার চোখ বন্ধ করে কোথায় নেওয়া হয়েছে তা আমি জানি না।’

টাকার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা জানতে চাইলে গফুর বলেন, ‘আমার কাছে এ এস আই ফিরোজ, এ এস আই মোস্তফা ১ কোটি টাকা চেয়েছে। তারা বলে এই টাকা না দিলে তোমাকে ক্রস ফায়ার দিবো। জান চাও নাকি টাকা চাও- বলেও তারা হুমকি দিয়েছে তারা। অনেক দর কষাকষির পর আমার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা নিয়েছে।’

অপহরণের পর রাতভর তার উপর নানা ধরেন নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

‘সেখানে একটি বাড়িতে জিম্মি করে রেখে রাতভর আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করে; পরে রাত আড়াইটার দিকে আমাকে মাইক্রোবাসে করে মেরিন ড্রাইভে নিয়ে গিয়ে ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা,’ বলেন গফুর। 

গফুরের পরিবারের লোকজন মেরিন ড্রাইভ সড়কের মহেশখালিয়া পাড়ায় গিয়ে ডিবি পুলিশকে টাকা দিলে তিনি ছাড়া পান বলেও জানান।

দ্ধারকৃত ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়ে আটক ছয়জনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সেনা কর্মকর্তা নাজিম বলেন, বুধবার ভোরে কক্সবাজারের দিকে যাওয়ার পথে ডিবির সদস্যদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি সেনাবাহিনী তল্লাশি চৌকিতে আটক করে তল্লাশি চালানো হলে সেখানে ১৭ লাখ টাকা পাওয়া য়ায়।

‘এ সময় ডিবি পুলিশের এসআই মনিরুজ্জামান পালিয়ে গেলেও ছয় জনকে আটক করা হয়,’ বলে জানান তিনি।

পরে আটককৃতদের কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারে মো. আফরুজুল হক টুটুলের কাছে হস্তান্তর করে ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দেওয়া হয়। 

টুটুল বলেন, আটককৃত ডিবির ছয়জন এবং পালিয়ে যাওয়া এসআই মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করা চলছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। 

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত