রাহুল গোস্বামী, কলকতা (ভারত) প্রতিনিধি : গো (গরু) মাংস, গোরক্ষক বা গোমূত্র নিয়ে ভারতে ঘটছে নানা কাণ্ড। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কয়েকটি রাজ্যে গরুর দুধের চেয়ে মূত্র বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
ভরতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে ,গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতায় গোমূত্র বিক্রি বেড়েছে।
এসব রাজ্যে চালু হয়েছে ‘গোমূত্র চিকিৎসা ক্লিনিক’। বিক্রি হচ্ছে ‘গোমূত্র ক্যাপসুল’ এবং ‘ডিস্টিল্ড’ ও ‘মেডিকেটেড’ গোমূত্র!
তবে বিষয়টি পুরোটাই ভণ্ডামি বলে মনে করেন কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ফার্মাকোলজির শিক্ষক স্বপন। তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টিই ভণ্ডামি। গাছগাছালি থেকে রাসায়নিক বের করে ওষুধ হতে পারে। তার ফার্মাকো কাইনেটিক্স ও ডায়নামিক্স রয়েছে। গোমূত্রের এমন কিছুই নেই।’
তবে বিজ্ঞান কী বলছে তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই স্থানীয়দের। বরং গোমূত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য রাজ্য থেকে গোমূত্র আমদানি করা হচ্ছে। এজন্য এক ব্যবসায়ী শ্রেণি গড়ে উঠেছে।
কলকাতায় গোমূত্র আমদানিকারী এক ব্যবসায়ী ললিত আগরওয়াল বললেন, ‘গত কয়েক বছরে এখানে গোমূত্রের চাহিদা পাঁচ গুণ বেড়েছে। মাসে প্রায় ১০ হাজার লিটার গোমূত্র বিক্রি হয় পশ্চিমবঙ্গে। এ রাজ্যে তেমন উৎপাদন নেই। তাই আমরা নাগপুর থেকে আনিয়ে দিই। এক লিটার গোমূত্রের দাম ৩৫০ টাকা। আর ওখান থেকে আনা দুধ আমরা বিক্রি করি ১৫০ টাকা লিটারে।’
আর কলকাতায় গরুর দুধ লিটার প্রতি ৩৫ থেকে ৪৮ টাকার মধ্যে। কিন্তু প্রায় ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার গোমূত্র।
কলকাতা পিঁজরাপোল সোসাইটি নামে একটি সংস্থার পাঁচটি গোশালা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ওই গোশালাগুলোর দেখভাল করছেন সর্বেশ্বর শর্মা। তিনি বলেন, ‘গোমূত্রের বিক্রি প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। কলকাতায় আমাদের এলাকায় মাসে প্রায় ৩ হাজার লিটার গোমূত্র বিক্রি হয় আমাদের। ১ লিটার গোমূত্রের দাম পড়ে ১৭৫ টাকা। সেখানে আমরা ১ লিটার দুধ বিক্রি করি ৫০ টাকায়।