স্টাফ রিপোর্টার।। যশোরের বাঘারপাড়ায় এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সেই দরিদ্র শিক্ষার্থী সুরাইয়া খাতুনের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব নিলেন যশোর জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার বিপুল ফারাজী। গত ৫ জুন দৈনিক গ্রামের কাগজে প্রকাশিত‘ বাঘারপাড়ার সুরাইয়া যেনো আঁধার ঘরে চাঁদের আলো’ শিরোনামে তথ্যবহুল একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি পড়ে ইঞ্জিনিয়ার বিপুল ফারাজী শনিবার সকালে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে তার প্রতিনিধিকে পাঠান। মাস দু’য়েক হলো সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে ই্িঞ্জনিয়ার বিপুল ফারাজী চিকিৎসাধীন থাকায় সুরাইয়ার মা’র সাথে সেল ফোনে কথা বলে এ ঘোষণা দেন তিনি। কলেজে ভর্তি,প্রাইভেট পড়ার খরচ,জামাকাপড়,বই,খাতা,কলমসহ লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহন ও সব ধরনের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের ভ্যানচালক মনিরুল শিকদারের মেয়ে সুরাইয়া খাতুন।
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ভ্যান চালক বাবাকে চার সদস্যের সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। অভাবের সংসারে তিন বেলা ঠিকমত পেটে ভাত জোটেনা তাদের। ভালো কোন পোষাকও পড়াতে পারেননি মেয়েকে। তবুও স্বপ্ন দেখেছে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করার। প্রথম ধাপে তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে মেয়ে সুরাইয়া। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সুরাইয়া বড়। তার একমাত্র ছোটভাই তানভীর রহমান তাসিন প্রথম শ্রেণীর ছাত্র।
এদিকে ভালো রেজাল্টে আনন্দে ভাসলেও সুরাইয়ার বাবা-মাকে ভর করে হতাশা । মেয়েকে কলেজে ভর্তিসহ পরবর্তীতে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার খরচ কিভাবে জোগাবেন-তা নিয়ে হতাশা দেখা দেয়। আয়ের উৎস বলতে তাদের একটিমাত্র ভ্যানগাড়িই ভরসা। যা কেনা হয় কিস্তিতে। ইঞ্জিনিয়ার বিপুল ফারাজী সহযোগিতার ঘোষণায় স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেন সুরাইয়ার বাবা-মা।
মা কোহিনুর বেগম বলেন,‘ বিপুল ফারাজী অসুস্থ থাকায় মোবাইল ফোনে আমার সাথে কথা বলিছে। আমার মেয়ের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। আমি নামাজ পড়ে তার জন্য দোয়া করবো’।
ভ্যানচালক বাবা মনিরুল শিকদার বলেন,‘বিপুল ফারাজীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তিনি আমাগের চিন্তামুক্ত করিছেন’।
যশোর জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার বিপুল ফারাজী বলেন,‘দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মেধাবী শিক্ষার্থী সুরাইয়ার পাশে থাকতে চাই। রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে। আমি মনে করি এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব’।
এদিকে এলাকার কয়েকজন যুবক দরিদ্র শিক্ষার্থী সুরাইয়ার পাশে থেকে সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। এদের মধ্যে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের রিয়াজ মানিক একজন। ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানীতে কর্মরত যুবক রিয়াজ মানিক বলেন‘ এলাকার মানুষ হিসেবে সুরাইয়ার পাশে থাকতে চাই।