শরীয়তপুরের জাজিরায় মাঝিরঘাট-শিমুলিয়া নৌপথে একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাজিরা পৈলান মোল্যারকান্দি নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর ট্রলারের যাত্রী আব্দুর রহমান আকন (৭০) নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। এছাড়া ট্রলারে থাকা দুই শিশুসহ চারজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
জাজিরা উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে মঙ্গলমাঝির ঘাট-শিমুলিয়া নৌপথে সব ধরনের নৌযান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে কয়েকজন ব্যক্তি জাজিরার পালেরচর এলাকা থেকে একটি মাছ শিকারের ট্রলারে করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে ১৬ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি পালেরচর ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। পাঁচটার দিকে পদ্মা নদীর মাঝে প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। স্থানীয় বিভিন্ন নৌযান ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার করে।
তাদের মধ্যে ৬ জনকে চিকিৎসার জন্য জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে বাবুরচর এলাকা থেকে আব্দুর রহমান আকনের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। তিনি জাজিরার ফকির মাহমুদ আকনকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি।
নৌ-পুলিশের মাঝিরঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মৃদুল চন্দ্র কপালিক বলেন, রাত ৮টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। অন্ধকারে নদীতে কাজ করা যাচ্ছিল না। তাই শুক্রবার (২৮ মে) সকালে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে। আর আমরা মাঝিরঘাটে দায়িত্ব পালন করছিলাম। নৌ-পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে একটি চর থেকে ট্রলারটি শিমুলিয়া যাচ্ছিল।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে পদ্মা নদীর একটি চর থেকে মাছ শিকারের ট্রলারে চেপে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছিলেন তারা। এ ঘটনায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর নিখোঁজ চারজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। দুর্ঘটনার পরই নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছিল।
এ রআগে গত ৪ মে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে স্পিডবোটের সঙ্গে বালু বোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় ২৬ জন প্রাণ হারান। এরপর ওই নৌপথসহ মাঝিরঘাট-শিমুলিয়া নৌপথে স্পিডবোট ও ট্রলারে যাত্রী পারাপার বন্ধ ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু ঈদের চার দিন আগে থেকে ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছিল।