আজ - শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সকাল ১১:২৩

পৌর আ’লীগ সম্পাদক বিপু শঙ্কামুক্ত, রাখা হয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঢাকায় চিকিৎসাধীন যশোর পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপুর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিম বৃহস্পতিবার বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা শেষে রিপোর্ট অপেক্ষাকৃত ভালো আসায় শুক্রবার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তাকে কেবিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে, আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী নেতা পুলিশি নির্যাতনের শিকার হওয়ায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার খোঁজ নিতে ছুটে যান আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

সূত্র মতে, যশোর পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপুকে সোমবার তুলে নিয়ে রাতভর চোখবেঁধে দফায় দফায় পুলিশ শারীরিক নির্যাতন করে। সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে আটকের পর নেতাকর্মীদের চাপে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে মুক্তি দিলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। পরে বুধবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে তার অবস্থার উন্নতির খবর জানান চিকিৎসকেরা। এদিকে যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপুর ওপর জেলা পুলিশি নির্যাতনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। এসময় তার চিকিৎসার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের সাথে চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপরেই একে একে হাসপাতালে বিপুর চিকিৎসার খবর নিতে ছুটে যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম, সহসভাপতি আব্দুল মজিদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম, চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরি, কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল, জেলা যুবলীগনেতা তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু, জেলা পরিষদের সদস্য বিপুল ফারাজীসহ জেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপুর ওপর পুলিশি নির্যাতনে জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশসহ তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

উল্লেখ্য, সোমবার যশোর শহরের কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্য নারী নিয়ে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বসেছিলেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন তাদের মারপিট করে। হট্টগোল দেখে পাশের শেখ আবু নাসের ক্লাব থেকে বিপু এগিয়ে যান এবং বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। তিনি মারপিটে জড়িত নন। কিন্তু পুলিশ তাকে রাত পৌনে ৯টার দিকে তুলে নিয়ে পুলিশলাইনে আটকে রেখে রাতভর বেধড়ক মারপিট করে। তার হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে চোখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। তার সারাশরীরে রক্ত জমাটের চিহ্ন রয়েছে। দুই পা ফেটে গেছে। এছাড়াও মাহমুদ হাসান বিপুকে আটকের পর ওই রাতেই পুলিশ শাহীন চাকলাদার সমর্থক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে, যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ হাসান বিপুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিলো। জিজ্ঞাসাবাদকালে শারীরিকভাবে কোনো আঘাত করা হয়নি। যেহেতু অভিযোগ এসেছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত