আজ - শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - সকাল ১১:৫৫

প্রাণহীন নিথর দেহে শনিবার দেশে ফিরছেন আশরাফ-শোকে কাতর বাংলাদেশ।

ওয়ালিউল হাসনাত: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ শনিবার (৬ জানুয়ারি) দেশে আনা হবে। ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন সৈয়দ আশরাফের ছোট ভাই।

ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি। এ সময় হাসপাতালে সৈয়দ আশরাফের শয্যা পাশে ছিলেন তার দুই বোন ও ভাই।

অসুস্থতার কারণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নেন আশরাফুল ইসলাম। দেশে না থেকেও গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

জাতীয় চার নেতা ১৯৭৫ সালে কারাগারে নিহত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে চলে যান সৈয়দ আশরাফ। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচন করে তিনি সংসদ সদস্য হন। এরপর ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনেও জয়ী হন তিনি।

২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনা কারাবন্দি হওয়ার পর আওয়ামী লীগের যে কয়জন নেতা দলের হাল ধরেছিলেন, তাদের অন্যতম সৈয়দ আশরাফ। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ রাজনৈতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা শোক জানিয়েছেন।

শোকে কাতর বাংলাদেশ

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা।

বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যুর সংবাদের পরই শোক জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ। শোক জানান, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ অন্যান্য রাজনীতিবিদরা শোক জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) রাতে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে তিনি প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। এছাড়া দায়িত্ব পালন করছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী হিসেবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফ কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫০ সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এছাড়া দায়িত্ব পালন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

আরো সংবাদ