আজ - সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - বিকাল ৪:৪৬

ফেসবুক পেজ ‘ফ্রেশ আ্যান্ড হেলদি’তে স্বাবলম্বী মিতাশা

দেশে একটা সময় ছিল ব্যাবসাটা শুধুমাত্র পুরুষের জন্য।  কিন্তু সময় বদলেছে, দৃশ্যপট পাল্টেছে। এখন  নারী-পুরুষ সবাই ব্যবসা করতে পারে।  বিশেষ করে  ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণে  নারীর জন্য ব্যবসাটা যেন এখন অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে। একটা সময় ছিল  মানুষ  পড়াশুনা করে চাকরির পিছনে  ঘুরত।  তিন্তু এখন  অনেকেই শিক্ষাজীবন থেকেই  শুরু  করছে ব্যবসা।  সেটা আবার  বাসায় বসেই। তাদেরই একজন  মিতাশা রহমান।  কুমিল্øায় জন্ম গ্রহণ করা  মিতাশা রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ থেকে পাশ করেছেন। তিনি পড়েছেন মনোবিজ্ঞান  বিভাগে। এই বিভাগ থেকে তিনি ¯œাতক শেষ করেছেন। মনোবিজ্ঞান  বিভাগ থেকে পাশ করলেও তিনি  আগ্রহী  ছিলেন ফ্যাশন নিয়ে কাজ করতে। আর তাই পাশ করার পর কাজ করছেন ফ্যাশন হাউস এবং হিজাব নিয়ে।  তবে সেটা ডিজিটাল বাংলাদেশের  সুযোগ  নিয়ে অনলাইনেই।
এসব ছাড়াও আরো একটি উদ্যোগ নিয়েছেন মিতাশা। নাম ‘ফ্রেশ অ্যান্ড হেলদি’। বসুন্ধরা রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ায় একটি শো-রুমও রয়েছে তার। এছাড়া হিজাব বিক্রী করেন অনলাইনেও। অনলাইনে ‘হিজাব শপ অনলাইন স্টোর’ নামে ফেসবুক পেজ থেকেও বিক্রি করেন হিজাব। তবে  ব্যবসার শুরুটা মোটেও  সহজ ছিলনা  মিতাশার জন্য।
মিতাশা বলেন, আমি অনলাইন বিজনেসের যাত্রা শুরু করি ২০১৪ সালে। কিন্তু শুরুটা অত সহজ ছিল না। অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ার সময় শখের বশে অনলাইন ব্যবসা  শুরু করি। কিন্তু সে সময়ই পরিবারের চাপে আমাকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। শুরু হয় দাম্পত্য জীবন। কিন্তু আমার মন মানছিল না।
তিনি বলেন, শুরুতে খুব মন খারাপ হত। ভাবতাম হয়ত জীবনে আর কিছুই করা হবে না। অথচ সবসময় আমার ইচ্ছে ছিল নিজে কিছু করব। নিজে অর্থ উপার্জন করব। কারো মুখাপেক্ষী হতে আমার কখনোই ভালো লাগেনি। বিয়ের কিছু দিন পর পড়াশোনা এবং ঘরের কাজের ফাঁকে অবসরে কিছু করবেন ভেবে একটি ফেসবুক পেজ খুলি। হাতে তৈরি কিছু কাজের মাধ্যমে শুরু হয় যাত্রা।
তিনি বলেন, শুরুতে খুব একটা সাড়া পাইনি। কিন্তু মাস কয়েক পর আস্তে আস্তে সাড়া পেতে থাকি। এতে উৎসাহ বেড়ে যায়। স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। পরে এ শখের স্বপ্ন পেশা থেকে নেশা, ধ্যান-ধারণায় রূপ নেয়। আমার এই উদ্যোগের নাম ‘ফ্রেশ অ্যান্ড হেলদি’। এখানে বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায়।
মিতাশা বলেন আমার জন্মস্থান কুমিল্লায়। আর তাই শুরুটা করি নিজ জেলার ঐতিহ্যবাহী ‘রসমালাই’ দিয়ে। এসময় বেশ সাড়া পাই। উৎসাহ বেড়ে যায়। এরপর আস্তে আস্তে অন্য জেলার বিখ্যাত সব খাবার বিশেষ করে সুন্দরবনের খাঁটি মধু, সিরাজগঞ্জের ঘি, বগুড়ার দই আর ঘানিতে ভাঙ্গা সরিষার তেলও বিক্রী করতে থাকি। এসব খাবার আইটেমে আমি প্রচুর সাড়া পাই। নিজ এলাকার পাশাপাশি অর্ডার আসতে থাকে বাইরের জেলা থেকেও। চেষ্টা করেছি নিষ্ঠা এবং সততার সাথে এসব অর্ডার সাপ্লাই দিতে যাতে গ্রাহকরা খুুশি হন।
তিনি বলেন, খাবারের পাশাপাশি আমি ‘হিজাব শপ অনলাইন স্টোর’ নামে আর একটি পেইজ খুলি। এখান হতে তিনি বিভিন্ন এলাকার তৈরীকৃত শাড়ি, জামা আর হিজাব বিক্রী করেন। এখানেও শুরুর দিকে খুব বেশী সাড়া না পেলেও পরে বিক্রী আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।
তিনি বলেন, দুই ব্যবসাতে সাফল্য  পাওয়ায় এখন আমি ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। মূলত এটি এখন ব্যবসার পাশাপাশি আমার নেশাও। হিজাব স্টোরে দেশীয় কাপড় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও আমদানীকৃত বেশ কিছু পন্য পাওয়া যায়। এরমধ্যে রয়েছে থ্রি-পিস, ওড়না এবং আন্ডার গার্মেন্টস।
মিতাশা বলেন, ‘আমার এই ব্যবসার বয়স প্রায় ছয় বছর। আর আমার এতদূর আসা হতো না, যদিনা আমার পরিবার আমাকে সমর্থন না দিতেন। মূলত আমার স্বামী এবং আমার পরিবারের কারনে এতদূর আসতে পেরেছি। তারা সবসময় আমাকে সমর্থন আর সাহস যুগিয়ে এসেছে এবং পাশে থেকেছেন।’

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত