জাহাঙ্গীর আমার কাছে ৬ শতক জমি চাইছে আমি তাকে দিতে রাজি হইছি। কিন্তু আমার সাথে প্রতারণা করে ৬ শতকের জাগায় ৬০ শতক জমি লিখে নেলে। আমি কল্পনাও করতি পারিনি যে, আমার ছেলে এভাবে আমার সাথে প্রতারণা করবে। প্রথমে তো আমি কিছুই বুঝিনি। আমি লিখাপড়া জানিনে। আমারে কলো রেস্ট্রি করতি হবে। তোর কিছু কাগজে টিপসহি করতি হবে। আমি রেস্ট্রি অফিসে গিছি। আমাকে কিছু কাগজপত্র দেখায়ে বললো এখানে এখানে টিপসই দে। আমি টিপসই দিয়ে দিলাম। যখন রেস্ট্রি করার সময় স্যার আমারে কলো ‘আপনার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে আপনি স্বেচ্ছায় ৬০ শতক জমি দিচ্ছেন ? তখন আমি স্যারের সামনে আর কিছু কতি পারিনি। আমি নিরুপায় হয়ে বললাম হ্যা দিচ্ছি।
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার চৌগাছা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের জিয়েগাতি এলাকার মৃত সদর আলী মন্ডলের স্ত্রী বৃদ্ধা মোমেনা খাতুন (৮০)।
মোমেনা খাতুন ৫ সন্তানের জননী। তার বড় ছেলে শামসুল আলম কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। মেজো ছেলে জাহাঙ্গীর আলম নসিমন চালায়। সেজো ছেলে মাহবুব সে বর্তমানে বিদেশ থাকে। ছোট ছেলে রিপন বিগত ছয় বছর আগে মারা গেছে ও একটি মাত্র কন্যা আমিরা খাতুন বিবাহিত।
বৃদ্ধা মোমেনা জানান, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি ১১৫ শতক জমি পায়। সেই জমি আমার ৫ সন্তান মিলেমিশে ভোগদখল করে। আছে সেখান থেকে আমার মেজো ছেলে জাহাঙ্গীর আলম আমার কাছে ৬ শতক জমি চাই আমি তাকে দিতে রাজি হই কিন্তু সে প্রতারণান এভাবে ৬০ শতক জমি লিখে নিয়ে আমাকে পরিবারের মধ্যে বিপদে ফেলেছে। আমার বাকি সন্তানরা এটা নিতে পারছে না বা পারবেও না। কারণ ১১৫ শতক জমির মধ্যে এক ছেলে যদি একাই ৬০ শতক জমি নিয়ে নেয় তাহলে বাকি সন্তানরাতো আমাকে ছেড়ে দিবে না।
মোমেনা খাতুন আরও জানান, আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আমার সাথে প্রতারণা করে জমি লিখে নিয়েছে। কিন্তু আমি আমার এই জমি ফেরত চাই। প্রয়োজনে আমি আদালতে মামলা করবো। ইতিমধ্যে এসিল্যাড বরাবর নামপত্তন না হওয়ায় জন্য আবেদন করেছি।
এদিকে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম তিনটি দাগে ৬০ শতক জমি লিখে নিয়েছে। তার মধ্যে রাস্তার পাশের একটি ২৬ শতক, বাসাবাড়ির ১৫ শতক ও অপর একটি রাস্তার পাশের ১৯ শতক জমি দাগ নম্বর উল্লেখ করে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার মা নিজেই জমি লিখে দিয়েছে। মোট কতটুকু জমি লিখে দিয়েছে প্রশ্ন করা হলে তিনি সেটা বলতে চাননি। এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন মোট ৫৯ শতক জমি তিনি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছেন।