মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌ-রুটে ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনে এখন বিআইডব্লিউটিসির সি-ট্রাক চলাচল করবে। পাটুরিয়া থেকে আসা ২০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতার “এসটি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত” সি-ট্রাক। আজ বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে এই সি-ট্রাক চলাচল করবে। ক্রমান্বয়ে সি-ট্রাক সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। যাত্রীদের দাবি কোনভাবেই আর ছোট লঞ্চ চালু করা যাবে না।
নারায়ণগঞ্জের আল আমিন নগরের কাছে কার্গোর ধাক্কায় মুন্সীগঞ্জগামী “এমএল আফসার উদ্দিন” ডুবে যাওয়ার পর এই নৌ-পথের সব লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করে দেয় বিআইডব্লিউটিএ। ছোট আকারের লঞ্চগুলো বন্ধ রাখায় খুশি হলেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগে যাত্রী সাধারণ। তাই সি-ট্রাক চালুর খবরে খুশি এই নৌ-পথে চলাচলকারীরা।
এসটি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ইনল্যান্ড জুনিয়র মাস্টার অফিসার নুর হোসেন সুমন জানান, সি-ট্রাকে যাত্রী নিরাপত্তা ও সেবার মান উন্নত রাখার কথা জানায় বিআইডব্লিউটিসি। বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, সানডেক টাইপ কোন লঞ্চ এই রুটে চলাচল করতে পারবে না। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান আহমদ শামীম আল রাজী গতকাল জানান, যাত্রী দুর্ভোগ লাঘবে ও যাত্রীর নিরাপত্তায় এই সি-ট্রাক চালু করা।
শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চ ডুবির কারণে মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌ-রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের মুক্তারপুর সেতু ঘুরে সড়ক পথে যাতায়তে সময় ও অর্থ দু’টোই ব্যয় হচ্ছে বেশী। এছাড়া মুক্তারপুর-নারায়ণগঞ্জ সড়ক পথে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বেশী। এ রুটে চলাচলকারী ২৪টি চলাচল করতো। সবগুলো লঞ্চই রিপ্লেজ করার নির্দেশনা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
নৌ-রুটে চলাচলকারী যাত্রী শহরের দেওভোগ এলাকার আমির হোসেন বলেন, লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ যেতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে সি- ট্রাক চালুর খবরে আমরা খুশি। লঞ্চে সময় ব্যয় হতো ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট। আর লঞ্চে ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন সিএনজি এবং অটো রিক্সায় মিলিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জে যেতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ব্যয় হয়। তাই সি-ট্রাক চালু করায় আধা ঘন্টার আগেই গন্তব্যে পৌছা যাবে।
কোর্টগাঁও এলাকার আজিম হোসেন বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভাল মানের ফিটনেস থাকা লঞ্চ চালু এখন সময়ের ব্যাপার। তবে সি-ট্রাক চালু করায় আমরা আরও খুশি। পর্যাপ্ত সি-ট্রাক থাকলে যাত্রীদের অনেক সুবিধা হবে। সহজ যাতায়াতে এই অঞ্চলের স্বার্থ-সামাজিক অবস্থারও উন্নয়ন হবে। যাত্রীদের দাবি কোনভাবেই আর ছোট লঞ্চ চালু করা যাবে না।
বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে ভাড়াও ৩০ টাকার বেশী হবে না। বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (ট্রাফিক) মো. রফিকুল ইসলাম গতকাল রাতে জানান, সার্বিক বিবেচনায় রুটের লঞ্চ বন্ধ করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রাজিব চন্দ্র রায় বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। সি-ট্রাক সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে।