আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৩:০৩

যশোরে নির্বাচনী সংঘাত ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপে পুলিশ মাঠে

শেষ মুর্হুতে পাল্টে যাচ্ছে যশোর সদরের নির্বাচনী মাঠের পরিস্থিতি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে হঠাৎ করেই বদলে গেছে ইউপি ভোটের হালচাল। মাঠ দখল রাখতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হানাহানি রুখতে ইউনিয়নগুলোয় টহল দিচ্ছে পুলিশ। ফলে আওয়ামী লীগের বিরোধ থেকে সৃষ্ট সংঘাতের লাগামে কিছু মাত্রায় হলেও টান পড়েছে। পুলিশ টহলের মুখে সংঘাত-সংঘর্ষ এড়িয়ে চলছে উভয় পক্ষ।

নির্বাচনী তফশিল অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সুযোগ রয়েছে আর মাত্র ৩ দিন। ৩ জানুয়ারি মধ্য রাত্রি থেকে কোন ধরণের প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পাবেন না প্রার্থীরা। তাই শেষ মুর্হুতে ১৫টি ইউনিয়ন জুড়ে দিনভর চলছে পথসভা, প্রচার মিছিল, মাইকিং শো-ডাউন। প্রার্থীদের মত কর্মী-সমর্থকরাও লিফলেট হাতে ভোটারদের দ্বারপ্রান্তে ছুটে চলেছেন বিরামহীন। শুক্রবার যশোর সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নের দৃশ্যচিত্র ছিলো ঠিক এমনি।

পুলিশি তৎপরতার মুখে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সংঘাত পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা মারমুখি অবস্থান থেকে আপাতত সরে গেছে। তবে এই কঠোর অবস্থান আলগা হয়ে গেলে পরিস্থিতির ফের অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই ভোটের দিন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তবে পুলিশের এরকম কঠোর অবস্থানেরও মধ্যেও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের কয়েকজন ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোসহ নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছেন বলে দাবি করেছেন নৌকার মাঝিরা। চাঁচড়া ইউনিয়নের বহিস্কৃত সভাপতি ওয়াজেদ মোড়লসহ বেশ কয়েকজন দল মনোনীত প্রার্র্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ভোটে যাতে নৌকার ফল বিপর্যয় হয় এমন চেষ্টা করছেন তারা।

নৌকার প্রার্থী সেলিম রেজা পান্নু বলেন, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ফুলসহ বেশ কয়েক বিএনপি-জামায়াতের সাথে যোগসাজশ করে নৌকার নিশ্চিত বিজয় নসাৎতের ষড়যন্ত্র করছেন। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন মোটর সাইকেলের বহর নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নৌকার ভোটারদের ভয়ভীতিও দেখাচ্ছেন।

জানা গেছে, বিএনপির রাজনীতি করতেন একসময় আব্দুর রাজ্জাক ফুল। জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও নৌকার বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের প্রার্থী শামীম রেজার দাবি, প্রচারণার সময় তার সাথে কয়েকটি মোটরসাইকেল থাকছে। তবে সেটি নিরাপত্তার স্বার্থে। হামলা এড়াতে তাকে এমনটি করতে হচ্ছে। হামলা হলে দ্রুত সরে পড়ার জন্য সাথে কয়েকটি মোটর সাইকেল রাখছেন। প্রচারণায় বিএনপি’র লোকজন অংশ নিচ্ছে এমন অভিযোগের ব্যপারে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী তার পক্ষে নির্বাচনের মাঠে আছে। সুতরাং এরকমটি করার প্রশ্নই ওঠে না।

এদিকে, দেয়াড়ায় গতকাল নির্বাচনী প্রচার র‌্যালি ঘিরে সংঘর্ষের আশঙ্কায় সেখানে বিপুল সংখ্যক পুুলিশ অবস্থান নেয়। স্থানীয়রা জানান, এদিন বিকেলে আমদাবাদ বাজার থেকে আনারস প্রতীকের র‌্যালি বের হওয়ার কথা ছিলো। আর এই র‌্যালি ঘিরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হতে পারে এমন খবর প্রচার হলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশের টহলের কারণে কোন ধরণের সংঘর্ষ হয়নি।

যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় তার জন্য সদরের প্রতিটি ইউনিয়নে টহল দিচ্ছে পুলিশের টিম। নির্বাচন পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।

সুত্র: দৈনিক কল্যাণ

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত