আজ - বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - সন্ধ্যা ৭:৪০

যশোরে বুকভরা বাওড়ের কমিটি নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব – উত্তেজনা।  

যশোর প্রতিনিধি || যশোরের বুকভরা বাওড় নিয়ে সাধারণ জেলেদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাওড় পরিচালনা কমিটি গঠনে ২শ’৬২ জেলে পরিবার হতাশা ও উদ্বিগ্নের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আর মাত্র দু’দিন পরেই শেষ হচ্ছে চলতি কমিটির মেয়াদ। এ মুহূর্তে চলছে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে রেশারেশি। ইতোমধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গেছে।
একপক্ষ নিজের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে নির্বাচনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অপরপক্ষ চাচ্ছে শান্তিপুর্ণ নির্বাচন। এছাড়া ইতোমধ্যে এক পক্ষ বলছে কমিটি গঠন করা হয়ে গেছে। অপর পক্ষ বলছে এ কমিটি আমরা মানিনা। অচিরেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বরাবরের মতো ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তারা।
যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া, নারাঙ্গালী, মটবাড়ি ও হালসা গ্রামের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে বুকভরা বাওড়। এ বাওড়ের ওপর এলাকার ২শ’৬২ জেলে পরিবারের সংসার চলে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধারদেনা করে বাওড়ে মাছ ছেড়ে তা ধরে বিক্রি করাই তাদের একমাত্র পেশা।

এমন শতাধিক পরিবার রয়েছে বাওড়ে জাল না টানলে চুলায় আগুন পর্যন্ত জ্বলেনা। জমি নেই বাড়ি নেই পরের উঠানে কুড়ে ঘর পেতে এই বাওড়কে সুখ দুঃখের সাথী করে কষ্টে সংসার চলে অনেকের। কিন্তু বর্তমানে এ বাওড় নিয়ে চরম হতাশা ও উদ্বিগ্নের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ জেলেরা। ৮ মার্চ বর্তমান কমিটির দু’ বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর পরে বাওড় কীভাবে কার নেতৃত্বে চলবে তা এখনো ঠিক হয়নি। মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও এ নিয়ে অনেকটা চিন্তিত বলে জানাগেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বাওড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে তৎকালীন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুর রহমান। এসময় স্বতঃস্ফুর্তভাবে সকল জেলে অংশগ্রহণ করেন।

চান্দুটিয়া গ্রামের বিষ্ণুপদ বিশ্বাস সভাপতি, নারাঙ্গালী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক,মঠবাড়ি গ্রামের শংকর কুমার বিশ্বাসকে কোষাধ্যক্ষ বাকি ১৩ সদস্যসহ সর্বমোট ১৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। গত ৮ মার্চ আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এ কমিটির হাতে ক্ষমতা দেয়া হয়। অথচ এবার এখনো পর্যন্ত আগামীতে এ বাওড়টি কীভাবে চলবে তা জানেনা কেউই। সভাপতি পদে ভোট করার জন্যে চান্দুটিয়া গ্রামের প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস ও বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস আগ্রহী থাকলেও বর্তমান সভাপতি বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বিনা ভোটে ক্ষমতা ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জেলে পরিবারের অভিযোগ।
এদিকে, কিছুতেই নির্বাচন ছাড়া কমিটি মানতে নারাজ প্রতিপক্ষরা। একই অবস্থা সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েও। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের বিপরীতে সুকুমার বিশ্বাস রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী। সাম্প্রতি ২৪ এপ্রিল সমিতির নিজ কার্যালয়ে কমিটি গঠন নিয়ে সাধারণ সদস্যদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নির্বাচন না করে বর্তমান কমিটিকে পুনঃনির্বাচিত ঘোষণা করার জন্যে বর্তমান সভাপতি জোর করে সাধারণ সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর করাতে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সভাকক্ষে চরম গোলযোগের সৃষ্টি হয়। সাধারণ সদস্যদের লাঞ্ছিতও করা হয় বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র জেলা মৎস কর্মকর্তার কাছে জমা দেন প্রতিপক্ষরা। তবে, এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সভাপতি পদপার্থী প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসসহ সাধারণ জেলে হরিপদ, রাজকুমার,রবিন অধিকারী, কার্তিক চন্দ্র, অভিমান্য, অশোক রায়, শ্রীমঙ্গল সরকার, সুকুমার সরকার, অধীর, ওহাব, জগদীস দাস, সন্নাসীসহ একাধিক জেলের সাথে কথা বললে তারা সকলেই বরাবরের মতো নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে আগ্রহী বলে জানান। এ বিষয়ে বর্তমান সভাপতি বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বলেন, ১শ’২৩ সদস্য রয়েছেন যারা চান এই কমিটি বলবৎ থাকুক। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন রয়েছে যারা বিরোধিতা করছে। তিনি আশাবাদী এ কমিটি আবার থাকলে বাওরের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
এ বিষয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খানজাহান আলী 24/7 নিউজকে বলেন, সমিতির ফান্ডে বর্তমানে ৩৭ লাখ টাকা ক্যাশ রয়েছে। এছাড়া সমিতি দেনা রয়েছে ৭৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে দেনা রয়েছে ৩৭ লাখ। তিনি আশা করেন এবার আবার যদি এ কমিটি বহাল থাকে তবে দেনার হার অনেক কমে যাবে এবং সমিতির সাধারণ সদস্যদের উন্নতি ঘটবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দে বলেন, বাওড় নিয়ে জেলেদের মধ্যে দু’টি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একপক্ষের সাথে আরেক পক্ষের বিভিন্ন সময় গোলোযোগের খবর তাদের কানে এসেছে। উভয়পক্ষের সাথে তিনি একাধিকবার বসেছেন আলোচনাও করেছেন। সমাধান এখনো হয়নি। এসময় তিনি আরো বলেন, নিজেদের মধ্যে গোলোযাগ করলে জেলেরা সরকারের দেয়া সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এতে করে বাওড়ের ব্যবস্থাপনা অন্যের হাতে চলে যাওয়ার

আরো সংবাদ