চৌগাছার পাতিবিলা গ্রামে ছেলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পিতা শরিফুল ইসলাম (৪২) নিহত হয়েছে। শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। শরিফুল ইসলাম পাতিবিলা গ্রামের আলী বকসের ছেলে। চৌগাছা থানার পুলিশ বলছে, কি কারণে শরিফুলকে হত্যা করেছে ছেলে রোমেন গ্রেফতার হলেই জানা যাবে।
শরিফুল ইসলামের ভাই শফিকুল ইসলাম জানান, শরিফুল শনিবার ভোরে সেহরি খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে বাইরে বের হয়। এ সময় ছেলে রোমেন হোসেন (২১) পিতা শরিফুল ইসলামকে ধারালো গাছি ‘দা’ দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে শরিফুল ইসলাম ডাক চিৎকার করলে শরিফুলের স্ত্রী হাসিনা বেগমও চিৎকার করতে থাকে। তাদের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে রোমেন পালিয়ে যায়। পরে আহত শরিফুল ইসলামকে উদ্ধার করে চৌগাছা সরকারি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোমেনের স্ত্রী সাদিয়া জানান, বাড়ির লোকজনের ডাক চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখে তার শ্বশুর রক্ত মাখা শরীরে পড়ে রয়েছে। রোমেন কখন ঘুম থেকে উঠে গিয়ে এসব করেছে কিছু বুঝতে পারিনি।
শরিফুলের প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম জানান, শরিফুলের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর ছেলে রোমেন। প্রথম স্ত্রীর এক মেয়ে সন্তানও রয়েছে। পারিবারিক কলহের কারণে প্রথম স্ত্রী শরিফুলকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যায়। এরপর শরিফুল হাসিনা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ছোট স্ত্রীরও একটা মেয়ে সন্তান রয়েছে।
রোমেনের কয়েকজন বন্ধু ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, রোমেন হাফেজি পড়েছে। হাফেজি শেষ করতে না পারলেও সে খুবই শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির ছেলে। বৃহস্পতিবারও তারাবি নামাজ পড়ে বন্ধুদের সাথে স্বভাব সুলভ আড্ডা দিয়ে বাড়িতে ফেরে। রোমেনের প্রথম স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে। ২ মাস আগে রোমেনের বর্তমান মা হাসিনা বেগমের বোনের মেয়ের সাথে রোমেনকে দ্বিতীয় বিয়ে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, শরিফুল ইসলাম দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ছিল।
ইউপি সদস্য লিপি খাতুন বলেন, রোমেন একটা শান্ত ও ভদ্র ছেলে। কি কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা বুঝতে পারছিনা। শরিফুল ইসলাম বিএনপি কর্মী ছিলেন। হত্যা ঘটনায় রোমেনকে কেউ প্ররোচনা দিয়েছে কিনা প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে ।
ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আতাউর রহমান লাল বলেন, ঘটনা শুনেছি। এর বেশি কিছু জানিনা।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম বাদি হয়ে রোমেনকে একমাত্র আসামি করে চৌগাছা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
যশোরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নুরে আলম সিদ্দিকী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসান হাবিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি রোমেনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, রোমেন গ্রেফতার হলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।