বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর। পাশাপাশি বাংলাদেশের আইপি টেলিভিশন জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও দায়িত্ব পালন করেছেন। যার নামে ও আছে অনেক প্রতারণা অভিযোগ। সংবাদকর্মী নিয়োগের নামে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতারণায় তার সহযোগী তার টেলিভিশনের সংবাদকর্মী। যার মধ্যে যশোর খুলনার ও অনেক প্রতারক সাংবাদিক জড়িত। তাদের নামে অনেক অভিযোগ। বিভিন্ন সময়ে উদ্ভট কর্মকান্ডে জড়িয়ে হয়েছেন সংবাদ শিরোনাম। কখনো গান গেয়ে পত্রিকার শিরোনামে এসেছেন, কখনো টেলিভিশনের পর্দায় উপস্থাপনায় এসে শিরোনাম হয়েছেন। আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও খবরের পাতায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। যদিও নারী উদ্যোক্তা হিসাবে তার রয়েছে সফলতার নজিরও। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে হেলেনা জাহাঙ্গীরের রয়েছে বিশেষ সখ্যতা অনেকবার আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সাল থেকে পোশাক শিল্পে নিজের নাম লেখান হেলেনা জাহাঙ্গীর। তবে জোশ খ্যাতি অর্জন করতে কিছুটা সময় খরচা করতে হয়েছে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে হাওয়া ভবনের আশীর্বাদপুষ্ট হিসাবে দেশজুড়ে শীর্ষ নারী উদ্যোক্তার একজন হিসাবে খেতাব পান হেলেনা জাহাঙ্গীর।
এসময় তিনি একে একে গড়ে তুলেন জয় অটো গার্মেন্টস লিমিটেড, নিট কনসার্ন প্রিন্টিং ইউনিট লিমিটেড, জেসি এমব্রয়ডারি অ্যান্ড প্রিন্টিং এবং হুমায়রা স্টিকার নামের পোষাক শিল্প ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপি সরকারের শীর্ষ মন্ত্রীদের সাথে ফটোসেশনে যে কয়েকজন শীর্ষ নারী উদ্যোক্তার দেখা মিলতো তাদের একজন ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর’। কিন্তু এসব পুরানো কথা। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর হেলেনা’র সে চরিত্র পাল্টে ফেলতে সময় লাগেনি। নিজেকে পরিচিত করেন আওয়ামী লীগের একনিষ্ট একজন কর্মী হিসাবে। ভাগিয়ে নেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য পদও। এমনকি গত ১৭ই জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরে অনুমোদিত আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতেও সদস্য মনোনীত হয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
তবে সর্বশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেলেনা জাহাঙ্গীর আলোচনায় এসেছেন নতুন এক রাজনৈতিক সংগঠন করার ঘোষনা দিয়ে। শুক্রবার (২৩ জুলাই) হেলানা জাহাঙ্গীর নিজের ফেসবুকে ‘আওয়ামী চাকুরীজীবি লীগ’ নামে এ রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের বিষয় জানান দেন। এরপর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হেলানা জাহাঙ্গীরের এ সংগঠনকে ‘রাজনৈতিক দোকান’ হিসাবে মন্তব্য করে অনেককে কটাক্ষ করতে দেখা গেছে।
হেলেনা জাহাঙ্গীর তার ফেসবুকে লিখেন: দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আর সরকারের হাতকে শক্তিশালী করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশের আওয়ামী চাকুরীজীবি লীগ। নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও এটি বেশ অনেকদিন ধরে কাজ করা একটি সংগঠন।এটির বয়স প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর। অনেক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে সারা বাংলাদেশ ব্যাপী। বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলায় অফিস সহ কমিটি দেওয়া হয়েছে। এই মুহুর্তে এই সংগঠনটির সদস্য লক্ষ লক্ষ। অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ব্যাংকার, বেসরকারি অনেক চাকরিজীবিরা এখানে আছেন। প্রচার প্রচারণা নেই হয়তো এই জন্য অনেকের অজানা। কিছুদিনের মধ্যেই সবাই জেনে যাবেন। কারন প্রতিদিন জুম মিটিং এর মাধ্যমে আগামীর কার্যক্রম আলোচনা চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই এটি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিত সহায়তাকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।