জাকারিয়া, ঢাকা অফিস:তারকা খ্যাতি নয় মহিলা সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়া হবে দলের জন্য অবদানের বিচারে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী আওয়ামী লীগ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করেছে। আগামীকাল সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুকদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আওয়ামী লীগ সংরক্ষিত আসনে ৪৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। আওয়ামী লীগ যাদের মনোনয়ন দেবে, তারা যে একাদশ সংসদে নির্বাচিত নারী সদস্য হবে তা নিশ্চিত। এবার নারী আসনের জন্য সহস্রাধিক নারী মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাতশোর বেশী। এদের মধ্যে তারকারা এবার মহিলা সংসদ সদস্য হতে বেশি আগ্রহী। কোনদিন আওয়ামী লীগ না করলেও হঠাৎ মনোনয়ন লাভে তারকাদের দৌড়ঝাঁপের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ এখন বাড়তি ‘সতর্কতা’ অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এতো বেশি মনোনয়ন ইচ্ছুক দেখে অবাক হয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে দলের নেতাদের তিনি বলেছেন, ‘দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরাই সবচেয়ে বড় তারকা।’ আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, তারকা খ্যাতিতে মনোনয়ন হবে না। মনোনয়ন দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত ৫টি নিরীক্ষার ভিত্তিতে। পাঁচ নিরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি নম্বর যারা পাবে, তারাই সংরক্ষিত কোটার জন্য বিবেচিত হবেন। নারী সংসদ সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে যে পাঁচটি বিষয় বিবেচ্য হবে, সেগুলো হলো:
১. আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে কতদিন জড়িত। কোন পদে আছে?
এখানে যিনি যতো দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ করেছেন, তিনি ততো বেশি নম্বর পাবেন।
২. রাজনীতির সূচনা কোথায়? আওয়ামী লীগ নাকি অন্য কোন রাজনৈতিক দল থেকে?
এখানে যাদের রাজনীতির সূচনা আওয়ামী লীগ থেকে, তারা সর্বোচ্চ নম্বর পাবে। বিএনপি এবং জামাত থেকে যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, তাদের বিবেচনায় নেওয়া হবে না। তবে বাম, কমিউনিস্ট পার্টি বা অন্য সমমনা দল থেকে আওয়ামী লীগে আসারাও কম নম্বর পেলেও বিবেচিত হবে।‘
৩. অতীতে সংসদ সদস্য বা অন্যকোন সরকারী পদ পেয়েছেন কিনা?
এখানে অতীতে যারা সংসদ সদস্য হয়েছেন, তারা কেমন করেছেন তা মূল্যায়ন হবে। যারা কিছুই পাননি তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৪. দলের সংকটে কী ভূমিকা ছিলো?
যেমন ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর, ২০০১ এর নির্বাচনের পর, ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের সময় সংকটকালে যারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন তাদের মনোনয়নে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৫. এলাকার জনগণের জন্য কী করেছেন? সংসদ হলে কী করবেন?
এক্ষেত্রে এলাকায় যারা কাজ করেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। সংসদ সদস্য হলে যারা ভিন্নধর্মী কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারবেন, তাদের সেটি বিশেষ যোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে।
জানা গেছে, মনোনয়ন ইচ্ছুকের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই প্রত্যেকের আলাদা আলাদা সাক্ষাৎকার গ্রহণ সম্ভব নাও হতে পারে। মনোনয়ন ফরমে দেয়া তথ্য এবং মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্ভাবনা বেশি। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘তারকাদের আলাদা সুবিধা দেয়ার প্রশ্নই আসে না।’