খান জাহান আলী ডেস্ক : যশোর জেলা, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রী-বার্ষিক সম্মেলনকে সামনে রেখে একটি বিশেষ মহলের গভীর ষড়যন্ত্রে হলুদ সাংবাদিকের স্বীকার যশোর জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মী। যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তৃণমূলের নেতা ক্ষ্যতো শাহিন চাকলাদারের জনপ্রিয়তার বাধা সৃষ্টিতে মরিয়া হয়ে পড়েছে একটি মহল।
দলের দুর্দিনে জামাত- বি এন পির সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মোকাবেলা করে দলের তৃণমূলের পাশে থেকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা নেতৃত্ব সহ্য করতে পারছেন না সংখ্যা কয়েক উচ্চ পদস্থ ধনী নেতা। শাহিন চাকলাদার গত সংসদ নির্বাচনে তিনি যশোর-৩ আসনের একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ভবিষ্যতেও তার গতিসম্পন্ন নেতৃত্ব তাকে বড় জায়গাতে বসাতে পারে এমনটায় আশংকা করে একটি মহল শাহীন চাকলাদার তথা যশোর জেলা আওয়ামী লীগকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে মাঠে নেমেছে। তারই অংশ হিসেবে শাহীন চাকলাদার সহ তার রাজপথের সকল সঙ্গী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সমকাল পত্রিকায় মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
শাহীন চাকলাদার ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়। ১৯৯৭ সালে তিনি শহর আওয়ামী লীগের সদস্য, ১৯৯৮ সালে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ২০০২ সালে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনোনীত হন তিনি। এরপর তৃণমূলের সরাসরি ভোটে শাহীন চাকলাদার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সর্বশেষ সম্মেলন থেকেও তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ফলে সমকালের প্রতিবেদনটিতে শাহীন চাকলাদার ২০০৩ সালে প্রথম আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে স্থান পান এমনটা উল্লেখ করাটা নিছকই অর্থহীন।
শাহিন চাকলাদারের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত পাকিস্তান আমল থেকেই। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল চাকলাদার পরিবারের সন্তান শাহিন চাকলাদার।তার বড় চাচা আব্দুল কাদের চাকলাদার ১৯৬১ সালে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। বড় ভাই আব্দুস সালাম চাকলাদারসহ পরিবারের ৭ জন মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।’
শাহীন চাকলাদারের সুনাম ক্ষুণ করতে মনগড়া খবরে বলা হয়েছে ২০০৮ সালের পর তার প্রভাব প্রতিপত্তি বেড়েছে। এই সময়ে তিনি শহরের কাঁঠালতলার বাড়ি, রাজধানীর কলাবাগান ও মহাখালী ডিওএইচএস’র বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে সংবাদে দাবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য কাঁঠালতলার বাড়িটি তিনি ক্রয় করেছেন ২০০৩ সালে। আর এরও আগে ১৯৯৮ সালে কলাবাগান এবং ১৯৯৭ সালের ৬ জুন মহাখালী ডিওএইচএস’র বাড়ি কেনা হয়েছে। আর ঘুরুলিয়ায় ৮৯ শতক মাঠের জমি ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই দলিল মূলে ১৪ লাখ টাকায় ক্রয় করেন শাহীন চাকলাদার। সংবাদে উল্লেখিক জমিগুলো দখলের দাবি করা হলেও তার কোনো তথ্যসূত্র বা অভিযোগ নেই। অভিযোগটি সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত ও ভিত্তিহীন।
শহরের চিত্রা সিনেমা হলের মূল মালিকদের কাছ থেকে ২০১৪ সালের ১৮ জুন রেজিস্ট্রি দলিল মূলে ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ জমি এক কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ক্রয় করেন শাহিন চাকলাদার। একইসঙ্গে ওই জমিতে অবস্থানকারী ৬ ব্যবসায়ীর পাওনা অর্ধকোটি টাকাও মিটিয়ে দেয়া হয়। এরপর আগেই বন্ধ হওয়া চিত্রা সিনেমা হল অপসারণ করে সেখানকার জিনিসপত্র জমির মালিকরা নিয়ে বিক্রি করেছেন। চিত্রা মোড়ের নবনির্মিত জাবির হোটেল ইন্টারন্যাশনাল এবং ভবন নিয়ে চটকদার তথ্য উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পাঁচ বছর আগে কয়েক কোটি টাকার জায়গা ৯ লাখ টাকায় বায়না করে দখল করা হয়েছে যা নিতান্তই হাস্যকর।’
এর আগে ২০১৮ সালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত “যশোরে চাকলাদারই সব ’’ শিরোনামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের পর প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলন করে গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত দাবি করে হলুদ সাংবাদিকতার নিন্দা জানানো হয়।অনেকটা একই ধরনের লেখা সামান্য ঘুরিয়ে পেচিয়ে সমকাল প্রকাশ করেছে বলে জানান স্থানীয় অনেক নেতাকর্মী। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম আলোয় প্রকাশিত মনগড়া প্রতিবেদনটির তথ্যভিত্তিক জবাব দেওয়া হয়।সেখানে বলা হয় চাকলাদার পরিবারের আরেকটি বহুল পরিচিত প্রতিষ্ঠান ‘চাকলাদার পরিবহন’ ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। নিজস্ব অর্থায়নে ১৯৯০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চাকলাদার টেক্সটাইল মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। দু’টি স্টোন ক্র্যাশিং ফিল্ড’র মধ্যে নওয়াপাড়ারটি ১৯৯৯ সালে ও ঢাকারটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত।
২০০৫ সালে চাকলাদার ফিলিং স্টেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর বাইরেও চাকলাদার পরিবারের বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। সব মিলিয়ে চাকলাদার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত বহু বছর আগে থেকেই। তার আরেক ভাই আব্দুল হামিদ ইদুল চাকলাদার এরশাদের শাসনামলে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির নেতা ছিল। ১৯৮৮ সময় যশোরে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে ডিটেনশনে ২১ মাস কারাভোগ করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে জেলা যুবলীগের কমিটিতে তিনি ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন। জেলা ফুটবল দলের প্রাক্তন সদস্য ইদুল চাকলাদার যশোরের বহু সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত বহু বছর ধরে। শত বছরের পুরানো প্রতিষ্ঠান যশোর ইনস্টিটিউটেও তিনি বহুবার নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। চাচাতো ভাই জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুও বহু বছর ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট।
ছাত্রলীগের রাজনীতি করার পর ১৯৯৬ সালে জেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক ও ২০০৩ সালের সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং এখনও তিনি সেই পদে আছেন। পাশাপাশি ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে রেন্টু চাকলাদার বিএনপির প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। ছোটভাই শামীম চাকলাদার চাকলাদার কনস্ট্রাকশনের কাজ দেখাশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। রাজনীতির সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আর ই-টেন্ডার, অনলাইনে দরপত্র দাখিলসহ ডিজিটাল নানা পদ্ধতির কারণে এখন আর টেন্ডারবাজির সুযোগ নেই, সেটি সকলেই জানেন।
সমকাল যশোর এলাকায় অন্তত শতাধিক জুয়ার আসর বসার খবর পাওয়া গেছে বলে দাবি করে যা নিয়ন্ত্রণ করে ফন্টু চাকলাদার ও টাক মিলন।আবার এমন তথ্য যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক নিজেই জানেন না এমনটি প্রকাশ করে প্রমান করেছে কথাগুলি অনেকটা সাজানো।যেখানে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানও দাবি করেন যশোরের কোথাও জুয়ার আসর নেই সেখানে প্রায় ১০০ টি জুয়ার আসর বসার তথ্য অনেকটায় শাহিন চাকলাদারের ব্যক্তিত্ব হানীর প্রচেষ্টা বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।
অন্যদিকে আগামী ১১ নভেম্বর সদর উপজেলা সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মনে স্থান পাওয়া শাহিন চাকলাদারের সবথেকে বড় আবিষ্কার যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী, রাজপথের জনপ্রিয় জননেতা শাহরুল ইসলামের পক্ষে নতুন নেত্রীত্বের দাবিতে জনস্রোতের মাঝে ফাঁটল ধরাতে এ ধরণের মিথ্যাচার রটানো হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমান যশোর জেলা ছাত্রলীগের প্রাণ তৃণমূল ছাত্রলীগের একমাত্র আইকন সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী সহ একাধিক নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহিন বলে দাবি করেছেন অভুযুক্তরা। তারা জানান, যশোরে শাহিন চাকলাদারের জনপ্রিয়তা দেখে একটি মহল এসব মিথ্যা প্রচারণা চালাতে ব্যস্ত।সকল অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রোনোদিত।