স্টাফ রিপোর্টার। যশোর জেলা বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক যশোর সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের শ্মশান পাড়ায় সাব্বির আহম্মেদ রাসেল (২৩) হত্যা ও ভাই আল-আমিনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।নিহত রাসেলের পিতা আবু সালেক মৃধা বাদি হয়ে ১৬ এপ্রিল রাতে মামলা করেন। মামলায় আরবপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার শহিদুজ্জামান শহীদসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখহ অজ্ঞাত নামা আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হচ্ছে মিয়ারাজ মোড়লের ছেলে ইমদাদুল হক এমে, চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে ওমর আলী, মৃত সলেমান মন্ডলের ছেলে রেজাউল ইসলাম।
অপর আসামিরা হচ্ছে বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের মৃত শাহাদত হোসেনের ছেলে শহিদুজ্জামান শহিদ (৪৯) বালিয়া ভেকুটিয়া মাঠপাড়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলাম মঙ্গলের ছেলে শামিরুল ইসলাম (২৮) বালিয়া ভেকুটিয়া মাধঘোপা পাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে পিচ্চি বাবু (২৪) বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ওরফে শিয়াল সিদ্দিকের ছেলে শাহিন (৩২) বালিয়া ভেকুটিয়া শ্মশান পাড়া গ্রামের সানু ফকিরের ছেলে সোহাগ (২৮) সাগর (২২) সোহেল (৩৫) একই গ্রামের দ্বীনছে আলীর ছেলে জনি (২৮) মৃত রুহুল আমিনের ছেলে সেলিম (৩৫) ইদ্রিজ আলী ওরফে মাদ্রাজের ছেলে আমির হোসেন (৪২) বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে আজাদ, মৃত শাহাদত হোসেনের ছেলে শামীম (৩৮) বাঁশবাড়িয়া গ্রামের রন্টু মিয়ার ছেলে শান্ত (২০) (২১) মোশারেফ হোসেন ওরফে গুজুর ছেলে আশিক (২৩) বালিয়া বালিয়া ভেকুটিয়া মাধঘোপা পাড়া গ্রামের সেকেন্দার আলী সেগুনের ছেলে খায়রুল ইসলাম (৪০) আকরাম আলীর ছেলে হাসিব (২২) আবু তাহের ড্রাইভারের ছেলে সবুজ হোসেন (২৪) পাকদিয়া গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮) বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মসলেম সরদারের ছেলে রমজান আলী সরদার (৫২) বড় ভেকুটিয়া গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে এনামুল (৩৩) বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৮)।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা সংঘবদ্ধ অপরাধি চক্রের সক্রিয় সদস্য। আসামি শহীদের নেতৃত্বে এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, খুন খারাবি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড করে বেড়ায়। সাব্বির আহম্মেদ রাসেল ও আল আমিন আসামিদের বেআইনি কার্যকলাপে বাধা দিলে শহীদের নেতৃত্বে আসামিরা রাসেলকে খুন করার জন্য বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ইতি পূর্বে কয়েকবার মারপিট করে আহত করে। এরপর থেকে আসামিরা রাসেলকে হত্যা করার জন্য সুযোগ খুজতে থাকে। ১৫ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে রাসেলসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বালিয়া ভেকুটিয়া শ্মশান পাড়ার জনৈক রবিউল ইসলাম বাবুর দোকানের সামনে ত্রান বিতরনের তালিকা করছিলো। এ সময় শহীদের নেতৃত্বে আসামিরা বেপরোগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় রাসেল তাদেরকে মোটরসাইকেল আস্তে চালানোর জন্য অনুরোধ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শহীদ ও তার সহযোগী ৫/৭ জন রাসেলকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। রাসেলসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রবিউল ইসলাম বাবুর দোকানের সামনে বসে কথাবার্তা বলছিলো। আধা ঘন্টা পর শহীদের নেতৃত্বে ৭/৮ জন ধারালো গাছি দা, চাকু রাম দা, লোহার রড, অবৈধ আগ্নেয় অস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে শহিদের হুকুমে খুন করার উদ্দেশ্যে রাসেলকে হাত পা ধরে উচু করে নিয়ে যায়। রাসেলের বড় ভাই আলআমিন ঠেকাতে গেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ত্রাসীরা রাসেলকে ধরে ভেকুটিয়া ঈদগাহের প্রাচীরের পূর্ব পাশে ফাঁকা জমিতে নিয়ে গাছি দা দিয়ে ঘাড়ে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ফেলে রেখে চলে যায়।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাসেল ও আলআমিনকে ওই রাতে ২৫০ শয্যার যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১ টায় রাসেল মারা যায়। আল আমিনের শারিরীক অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আহসান উল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই মামলার এজাহার নামীয় আসামিদের মধ্যে তিনজনকে শুক্রবার ১৭ এপ্রিল দুপুরে এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।