আজ - শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১০:২৯

কিশোরদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতনের বর্ণনা এসপির মুখে।

স্টাফ রিপোর্টার : যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে ‘বন্দি’ তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা ও অন্য ১৩-১৪ জনের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
শনিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে তিনি ঘটনার বর্ণনা দেন। এই তথ্য তিনি জানতে পেরেছেন ঘটনার দিন গভিররাতঅব্দি কেন্দ্রের অভ্যন্তরে অবস্থান করে বিভিন্নজনের কথা বলে এবং গ্রেফতার পাঁচ কর্মকর্তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে।
পুলিশ সুপার জানান, গত ৩ আগস্ট কেন্দ্রের প্রধান নিরাপত্তা কর্মী নুরুল ইসলাম তার মাথার চুল কেটে দিতে বলেন হৃদয় নামে এক বন্দিকে। কিন্তু হৃদয় দেয়নি। সে জানায়, আগের দিন দুইশ জনের চুল কেটে দিয়েছে। তাই সে ক্লান্ত। পরে চুল কেটে দেবে বলে সে প্রতিশ্রæতিও দেয়। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নুরুল ইসলাম কয়েক কিশোরের বিরুদ্ধে মাদক সেবন করার অভিযোগ দেন কেন্দ্রের পরিচালকের কাছে। হৃদয় ও পাভেল নামে দুই যুবকের মধ্যে সমকামিতারও অভিযোগ করেন। এতে কিশোররা ক্ষুব্ধ হয়ে নুরুল ইসলামকে মারপিট করে। পিটুনিতে হাত ভেঙে যায় নুরুলের। এরপর কেন্দ্রের কর্মকর্তা সিসি টিভির ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হন, ১৩ কিশোর নুরুল ইসলামকে মারপিটে জড়িত।
এসপি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে শোক দিবসের অনুষ্ঠান কীভাবে হবে, তা নিয়ে আলোচনা সভা শেষে কর্মকর্তারা ওই ১৩ কিশোরকে তাদের কাছে ডেকে নেন। সেই সঙ্গে ডেকে আনেন তাদের অনুগত ৭-৮ ‘বন্দি’ কিশোরকে। তাদের দিয়েই ওই ১৩ কিশোরকে মারপিট করা হয়। হাত-পা বেঁধে, মুখে গামছা ঢুকিয়ে তাদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়।
নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এমনও ঘটনা ঘটেছে একজনকে জানালার ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে অপর পাশ থেকে দুইজন তাকে টেনে ধরে রাখে। এরপর পা থেকে কোমর পর্যন্ত বেদম পেটানো হয়। কর্তৃপক্ষের কয়েকজনের নির্দেশনা ছিল, সেন্সলেস না হওয়া পর্যন্ত পেটানোর। বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে এমন অভিযোগও আমরা পেয়েছি।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) গোলাম রব্বানী, কোতয়ালী থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।

আরো সংবাদ