সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব। আজ রোববার সকাল ১১টায় তাদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টায় চার আসামিকে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজারস্হ র্যাব-১৫ কার্যালয়ে।
জেলা হাসপাতাল চত্বরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘এই চার আসামির প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড গত ২৪ আগস্ট মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। সুবিধাজনক সময়ে আজ তাদের আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেবেন কি না, তা তাদের ইচ্ছা ও এখতিয়ার। এ মুহূর্তে এ ব্যাপারে বলার কিছু নেই।’
সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত এই চার আসামি হচ্ছেন— পুলিশের বহিষ্কৃত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন। তারা টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। তারা চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কৃত।
গত ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক নন্দ দুলাল রক্ষিতের সঙ্গে এই চার পুলিশ সদস্যও আদালতে আত্মসমর্পন করেন। ওই দিন আদালতে সাত পুলিশ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত প্রদীপ, লিয়াকত ও নন্দ দুলালের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। লিটন মিয়া, সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আলম মামুনকে দুই দিন কারাগার ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন আদালত। আদালতের আদেশ মতে গত ৮ ও ৯ আগস্ট এই চার আসামিকে জেলা কারাগার ফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
১০ আগস্ট এই চার আসামির প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয় আদালতে। ১২ আগস্ট কক্সবাজার সদর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৪’র বিচারক তামান্না ফারাহ শুনানি শেষে চার আসামির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ১৪ আগস্ট চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা কারাগার থেকে র্যাবের হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। সেদিন থেকে তারা কারাগারে আছেন।
২৪ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় চার আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। সেই আদেশবলে আজ তাদের রিমান্ডে নেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশের খান।