যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থগিত অক্সিজেন প্লান্ট দীর্ঘ ১২ বছর ধরে পড়ে রয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য আরও একটি নতুন প্লান্ট বরাদ্দ দেয়া হলেও আজও স্থাপিত হয়নি নতুন কোন প্লান্ট । ফলে, এ হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট কাটছে না।
সূত্র থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয় যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ)। ওই সময় অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হয়। তখন করোনারির কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রোগীদের পাইপের মাধ্যমে সেখান থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হতো। সিসিইউ ভবনের ওয়ার্ডগুলো যে সময় সাজানো হয়েছিল চিকিৎসার অত্যাধুনিক উপকরণ ও মূল্যবান লাইট দিয়ে। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে সেসব হারিয়ে গেছে। অক্সিজেন প্লান্ট এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। তবে মেশিনটি এখনো সচল আছে। অক্সিজেন পাইপের এক জায়গায় ছিদ্র হয়েছে। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। আক্রান্ত রোগীদের নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হয়ে পড়ে ভেন্টিলেটরের দ্বারা আইসিইউ-তে চিকিৎসা সেবার।
এ সময় হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক ও বরাদ্দ এখনো আসেনি। পুরনো অক্সিজেন প্লান্টটিও চালু করা হয়নি। অক্সিজেন প্লান্ট থাকতে যদি জনগণের কল্যাণে না আসে তাহলে এ ধরনের মূল্যবান মেশিন থেকে কি লাভ? এমন প্রশ্ন যশোরের সচেতন মানুষের। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এর মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত যশোর জেলা কমিটি পক্ষ থেকে আক্রান্তদের যথাযথ সেবা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় হাসপাতালে কোভিড-১৯ ইউনিট আইসিইউও পড়ে থাকা অক্সিজেন প্লান্টটি চালু করার। সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ করার কথা। এর অংশ হিসিবে গত ৭ সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে কোভিড-১৯ রোগী স্থানান্তর করা হয় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের কোভিড-১৯ ইউনিটের। সকলের প্রত্যাশা ছিল, ওই ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীরা অক্সিজেন পাবেন। কিন্তু দু’সপ্তাহ হলেও করোনা রোগীরা অক্সিজেন পাচ্ছে না। অক্সিজেন পাচ্ছেন না অন্য ওয়ার্ডের রোগীরাও।
মান্ধাত্মা আমলের সিলিন্ডারে ভরা অক্সিজেন করোনা রোগীসহ সব রোগীদের দেয়া হচ্ছে। অনেক সময় স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনার ভয়ে হাতে করে ওই অক্সিজেন দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফলে চিকিৎসা সেবার সংকট দেখা দিচ্ছে। এব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দিলীপ কুমার রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অক্সিজেন প্লান্ট দ্রুত চালু হবে। লোক এসে গেছে। তারা ডিজাইন করবে। তারপর সংযোগ দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে।