আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:০১

নেতৃত্ব ছাপিয়ে একজন মহামানব “শাহারুল ইসলাম”

পাঠকের কলাম : এই স্বত্ত্বার প্রতি আমি চির ঋণি। না আমি কোন নেতার কথা বলছি না, আমি ব্যক্তির কথা বলছি। যা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং গোপনীয়। কিন্তু এই গোপনীয়তা রক্ষা করা মানে ব্যক্তিদ্বয়ের মহানুভবতা অস্বীকার করার সামীল অনুভব করছি। বিশেষ করে তাদের যত্নশীলতা তাদের ভালবাসার গভীরতা তখন অনুভব করতে পারিনি যখন মাথার উপর আমার বাবার ছাঁয়া ছিল। আমার বাবা আমার বটবৃক্ষ ছিলেন। সে কারণেই সূর্যের প্রখর তাপ আমাকে উত্তপ্ত করতে পারেনি। আজ যে ব্যক্তিদ্বয়ের কথা বলছি…. তাঁদের অসংখ্য অবদানের মাঝে আমার পেছনে তিনটি অবদানের কথা বলব, ১। ভার্সিটিতে পড়ার সময় ঢাকাতে থাকতাম, একদিন ভোরে উঠে দেখি আমার ল্যাপটপ, মোবাইল, আমার বন্ধু জুবায়েরের সদ্য কেনা মোবাইল গায়েব৷ বিষয়টি তাৎক্ষণিক তাঁদের জানালে তাদের তৎপরতায় রাজধানীর হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে মালিবাগ সিআইডি ও জঅই এর যৌথ সহায়তায় আমাদের রুম থেকে হারিয়ে যাওয়া সকল জিনিস ১২ ঘন্টার মধ্যে অক্ষত অবস্থায় ফেরৎ পেয়েছিলাম৷ ২। আমি ক্লাস নাইন থেকে গণমাধ্যমের সাথে সংযুক্ত, তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকাতে পড়া লেখার পাশাপাশি একটি আইপি টিভিতে হেড অব নিউজ এবং নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে চাকুরী পেয়েছিলাম। সদ্য প্রাপ্ত চাকুরীতে ক্যারিয়ার গড়া শুরু সবে শুরু তাঁর মধ্যেই পক্সের হানা৷ চলে আসতে হয় যশোরে৷ দীর্ঘ ১ মাস বিছানায় কাটিয়েছি, এই খবর শোণামাত্র রাতের আঁধারে গাড়ীর টিকি ভর্তি ফলমূল নিয়ে আমার বাড়ীতে হাজির সেই দুই জন৷ শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাকে তাঁরা ভোলননি। ৩। আমার বাবা মারা গেলেন ১৩ এপ্রিল ২০২০। আমি দিশেহারা হয়ে পড়লাম৷ বাবা দীর্ঘদিন হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল যশোরে চিকিৎসাধীনও ছিলেন৷ বিধাতার নির্মম পরিহাস অবেলায় বাবাকে হারিয়ে সংসারে একা হয়ে গেলাম মুহুর্তেই৷ বাবার লাশ বহণকারী এ্যাম্বুলেন্স ভাড়াও আমার পকেটে ছিলনা৷ একদিকে বাবা হারানোর ব্যাথা অন্যদিকে আর্থিক সংকটে আমার মাথা ভারী হয়ে উঠতে লাগলো৷ আমি কাঁদতে পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলাম সেদিনও। হটাৎ বিপর্যয়ের জন্য সেদিন প্রস্তুত ছিলাম না৷ বাবা যখন মারা যান তখন ফজরের আজান হচ্ছে চারদিকে৷ মুহুর্ত টা কিন্তু আমি অনুভব করেছি। তারপর দিনের আলো বিকিরণ ছাড়াতে থাকলেও আমার আঁধার ঘনীভূত হতে থাকে৷ কি করব না করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না৷ বাবার জানাজায় সকলের সাথে শরীক হলেন সেই মহান ব্যক্তিদ্বয়। আমি কিন্তু আমার সীমাবদ্ধতার কথা কাউকে জানায়নি। বাবার জানাজা শেষে নেতা আমাকে কাছে ডাকলেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কিভাবে কি করব সব কিছু বললেন। চলে যাবার আগে আমার হাতে কিছু একটা দিলেন। বললেন এটা রাখো। আমি রেখে দিলাম। বাবার লাশ নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে রওনা হলাম শেষ গন্তব্যের দিকে। পথিমধ্যে নেতার ফোন। তোমার বিকাশ নাম্বার দাও। টাকা লাগতে পারে৷ আমি অনেক বুঝিয়ে না করলাম৷ তারপর পকেট থেকে নেতার দেয়া জিনিস গুলো খুলে দেখলাম তিনি আমাকে কিছু টাকা দিয়েছেন যা পর্যাপ্ত৷ তারপরও তিনি বিকাশ নাম্বার চাচ্ছেন। আমি আশার আলো দেখতে পেলাম শত দুঃখের মাঝেও স্বস্তি পেলাম। বাবার দাফন শেষ করে সব কিছুর খরচ মেটাতে আমাকে আর কোন বেগ পেতে হয়নি। গল্পটা যতটা সহজ সাবলীল ভাষায় লিখলাম পরিস্থিতিটা এতটা স্বাভাবিক ছিলনা। আজও চোখ বন্ধ করলে সেই বিভীষিকা আজও দেখতে পাই৷ কৃতজ্ঞতা জানায় তাঁদের প্রতি যারা আমার দুঃসময়ে আমার পাশে থেকে সর্বিক সহায়তা করেছিলেন। অন্তরের অন্তস্তল থেকে তাঁদের জন্য দোয়া করি৷ আমি তাঁদের নিকট চিরঋণে আবদ্ধ। তাঁদের মহানুভবতার কথা লিখে শেষ করা যাবেনা। সংক্ষেপে যতটুকু সম্ভব ততটুকু প্রকাশ করলাম৷ সেই দুই মহা মানবের অন্যতম একজন হলেন যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নয়ণমণি নন্দিত জননেতা জনাব শাহারুল ইসলাম অন্যজন হলেন আমার মান অভিমানের বেড়াজালে আবদ্ধ প্রিয় ব্যক্তিত্ব হাসান কবির তাজু৷ তাজু মামার সাথে আমার খুনসুটি লেগেই থাকে কিন্তু তিনি আমার যত আব্দার মিটিয়েছেন, আমার মনে হয়না তাঁর আপন ভাগ্নের জন্য তিনি এতটা করেছেন৷ আপনাদের নিকট আমি চিরঋণী। নেতা নয় ব্যক্তি শাহারুল ইসলাম ও হাসান কবির তাজুর কথা বললাম। ব্যক্তিত্ব আগে প্রস্ফুটিত হয় আর ব্যক্তিত্বের বিচারে নেতা সৃষ্টি হয়। আপনাদের জন্য আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে দোয়া রইল। মহান প্রভু আপনাদের উত্তম ব্যক্তিত্ব হিসেবে কবুল করুক। আমার বাবার রূহের মাগফেরাতের জন্য সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করছি। আজ এ পর্যন্তই । লেখক : সালাহ্‌উদ্দীন সাগর সভাপতি ,৪ নং নওয়াপাড়া ইউনিয়ন,ছাত্রলীগ।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত