স্থগিত হওয়া যশোর পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে বুধবার। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলেছে ভোটগ্রহণ। এই পৌরসভার নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে। পৌর এলাকার ৫৫টি কেন্দ্রে ৪৭৯টি ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে প্রতিটি কেন্দ্রে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ ইভিএম মেশিন প্রস্তুত রাখা ছিলো।
যশোর পৌরসভার এবারের নির্বাচনে বর্তমান কাউন্সিলরদের অনেকেই ধরাশায়ী হয়েছেন। নতুনদের জয়-জয়কার হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো নির্বাচন করে জিতেছেন তারা। এ সংখ্যা একেবারে কম না। নতুন ছয়জন প্রার্থী কাউন্সিলর হয়েছে।
অপরদিকে, একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া বর্তমান ছয়জন কাউন্সিলর ভোটারদের মন জয় করতে পারেননি। এ কারণে ভোটাররা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
নয়টি সাধারণ কাউন্সিলর পদের মধ্যে মাত্র তিনটিতে বর্তমান তিন কাউন্সিলর বিজয়ী হতে সক্ষম হয়েছেন। এরা হচ্ছেন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ রাশেদ আব্বাস রাজ, ৩ নম্বরে শেখ মোকছিমুল বারী ও ছয় নম্বরে আলমগীর কবির সুমন।
পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা হচ্ছেন, এক নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আহম্মাদ শাকিল। তিনি এক হাজার ছয়শ’ ৬৯ ভোট পেয়ে তিন প্রার্থীর মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন। চার নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মুস্তাফিজুর রহমান দু’হাজার চারশ’ ৬৫ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হওয়া জাহিদ হোসেন মিলনের কাছে এক হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান চাকলাদার মাত্র দুশ’৯৫ ভোট পেয়েছেন। তিনি ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে পঞ্চম হয়েছেন। সাত নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা মাত্র আটশ’ ৭৭ ভোট পেয়ে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে পঞ্চম হয়েছেন। আট নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সন্তোষ দত্ত এক হাজার একশ’ ৫১ ভোট পেয়ে চারজন প্রার্থীর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন এবং নয় নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম দু’ হাজার দুশ’ ৮৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।
ভোটারদের দাবি, বর্তমান কাউন্সিলররা গত পাঁচ বছরে তেমন উন্নয়ন কার্যক্রম দেখাতে পারেননি। প্রয়োজনীয় খোঁজ নেননি তাদের। এ কারণে তারা পরাজিত হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের গ্লানি নিয়েই কাউন্সিলর পদ ছাড়তে হচ্ছে বর্তমান ছয় কাউন্সিলরকে।
সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্নের জন্য এক হাজার ৪৫০ জন নির্বাচনি কর্মকর্তার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক হাজার ২০০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেছে। যশোর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে কাগজে-কলমে তিনজন প্রার্থী থাকলেও বিএনপি প্রার্থী মারুফুল ইসলাম আগেই সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
এ পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন এবং নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৪৬ হাজার।