গত ২৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলার নির্দেশনার পর থেকেই দোকানপাট ও শপিংমলগুলোতে ভিড় বাড়ছে। একারণে রাজধানীর সড়কেও প্রচণ্ড যানজট দেখা গেছে। আর এসব কারণে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন শিথিল হয়ে পড়ছে।
রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে বাস ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি, রিক্সা, সিএনজি ও মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। দুপুর ১২টার দিকে বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার ও ফার্মগেটে পরিবহনের বিপুল চাপ দেখা গেছে।
যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ানবাজারের কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ বলেন, ৫ মিনিট পর পর সিগনাল ছাড়তে হচ্ছে। এতেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার ও ফার্মগেটে পুলিশের চেক পোস্ট থাকলেও সেগুলোতে কোনো তল্লাশিও দেখা যায়নি। কারণ ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
সকালে মিরপুর থেকে মতিঝিলে রওনা দিয়েছেন সুলতান আহমেদ নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, প্রতিটি মোড়ে মোড়ে জ্যামে পড়তে হয়েছে। যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। আর পুলিশের কোথাও কোন তৎপরতাও দেখছি না।
রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টনে যানবাহনের বিপুল চাপ দেখা গেছে। এই এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার কারণে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে।
অন্যদিকে রাজধানীর দোকানপাট ও শপিংমলগুলোতেও প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার ও নিউমার্কেটের শপিংমলের বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে শপিংমল খোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। মূলত ঈদকে সামনে রেখেই ক্রেতাদের সমাগম বেশি হচ্ছে। আর লোক সমাগমের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু শপিংমলগুলোর কিছু দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছিলো। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেককেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। আবার অনেককেই মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। এছাড়া কিছু মার্কেটের প্রবেশ পথে হাত স্যানিটাইজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এদিকে দোকানগুলোতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো সচেতনতা দেখা যায়নি। দোকান মালিকরা জানান, দোকানে ভিড় অনেকটাই বেড়েছে। গণপরিবহন খুললে ভিড় আরো বাড়বে।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম দফায় ৭ দিনের জন্য ‘বিধিনিষেধ’ শুরু হয়। পরে আরো দুই দিন বাড়িয়ে শেষ হয় ১৩ এপ্রিল। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ ঘোষণা করে সরকার। যা চলে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। পরে ২১ এপ্রিল তারিখ থেকে আরেক দফায় এই বিধিনিষেধ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল করা হয়। নতুন ঘোষণায় এবার তা ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।