খানজাহান আলী 24/7 নিউজ ডেস্ক ।। রাজারহাটে মাদক ব্যবসায়ীদের কোন্দলের স্বীকার হয়েছে রূপদিয়া শহীদস্মৃতি মহা বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহামুদুল হাসান সাগর (১৮) সহ এলাকার অর্ধ ডজন শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগীদের দাবী, রামনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান হাসু ও তার তার পোষা ক্যাডার জামাল হোসেন ফুলনের ইন্দনেই তাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে।
গত ৩০ মে সন্ধ্যায় রাজারহাট মোড়ে দু’পক্ষের অভ্যন্তরিন ঝগড়ায় কয়েকজন আহত হয়েছে। এতে রামনগর ইউনিয়নের মোল্যাপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে আরিফ হোসেন বজলু (২০) কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বজলু রাজারহাট মোড়ের এক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, মাদক সেবনের নিরাপদ এলাকা রাজারহাট মোড়ের শ্বশান ঘাট। বজলুসহ উঠতি বয়সের কয়েকজন নিয়মিত সেখানে মাদক সেবন ও বিক্রি করত। এলাকার যুবকেরা এদেরকে উচ্ছেদ করতে উদ্যোগ নিয়ে গত ২৮ মে বজলুসহ সকল মাদকসেবীদেরকে এ এলাকায় মাদক সেবন ও বিক্রি করতে নিষেধ করেন। এতে বজলু সহ তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে এসব যুবকদের হুমকি দিয়ে শ্বশান ঘাট এলাকা তাদের বস ফুলনের বলে দাবী করেন। এর পর থেকে গত ২৯ ও ৩০ মে ফুলন গংয়ের ছেলেরা বেপরোয়া হয়ে মাদক সেবন ও বিক্রিতে বাধা দেওয়া ঐসব যুবকদের খুজতে থাকে। একপর্যায়ে ৩০ মে সন্ধ্যায় রাজারহাট মোড়ে বজলুসহ ফুলন গংয়ের ছেলেরা স্থাণীয় যুবকদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এতে ঘটনাস্থলে কয়েকজন আহত হন। ঘটনাটি চাঁপা দিতে ফুলনের পরামর্শে বজলুকে যশোর সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। তবে বজলুকে এক দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়।
ঘটনার পর একটি স্বার্থনেশি মহল রাজনৈতিক ফয়দা লুটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তারা ঘটনার দায়ে স্থাণীয় একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকে ফাসানের চেষ্টা করে। এ নিয়ে তারা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রচার করে। প্রকাশিত ঐ সংবাদে রামনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান হাসুকে দেখে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে রামনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান হাসুর পদচ্যুতির দাবীতে রাজারহাটে ঝাটা মিছিল ও মানববন্ধন করে রামনগর ইউনিয়ন বাসী। হাসু আর তার পোষা ক্যাডার ফুলন বাহিনীর নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকার অনেক পরিবারকে স্বচ্ছার হতে দেখে এসব পরিবারের তরুণ ও উঠতি বয়সী যুবকদেরকে বিভিন্ন ভাবে মামলা সহ মানহানীর চেষ্টা করছে তারা।
এলাকাবাসীর দাবী, সম্প্রতি হাসু ও ফুলন স্থানীয় শিক্ষার্থীদেরকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে রামনগর নামেজ সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা করতে নিষেধ করে ঐ অঞ্চলের মাদক বিক্রেতাদেরকে আধিপত্য বিস্তারে সহযোগিতা করে। তাদের মদদে কিছু মাদকসেবী প্রায়ই রাজারহাট মোড়ে কারণে অকারণে স্থানীয় যুবকদেরকে হয়রানি ও মারধোর করে। এছাড়াও মোল্যাপাড়া এলাকার আনারের ছেলে রিমন ও একই এলাকার ফিরোজের ছেলে তুরানকে ইজিবাইক থেকে চাঁদা তুলতে দেখা যায়। এদেরকেও নিয়ন্ত্রন করে হাসু ও ফুলনগং।
গত ৩০ মে মাদক সেবন ও বিক্রিকে কেন্দ্র করে রাজারহাট মোড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় পার্শ্ববর্তী এলাকার মোঃ ইব্রাহীম খলিলের ছেলে মাহামুদুল হাসান সাগরকে জড়িয়ে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। সংবাদে সাগরকে চাঁদাবাজ অপবাদ দিয়ে বজলুকে জখমের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। ঐ প্রকাশিত সংবাদের ছবিতে রামনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান হাসুসহ রিমন,তুরান ও রহিমকে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাগর বলেন, “আমি ঐদিন সন্ধ্যায় বেজপাড়ায় আমার ফুফুর বাড়িতে ছিলাম। এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমিসহ আমার কয়েকজন বন্ধুকে এখানে কৌশলে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে আইনী সহযোগিতা নিব।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা তুরানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “আমি মারামারির সময় রাজারহাট মোড়ে ছিলাম। তবে আমার কাকু ওসি জাহিদ ইকবাল আমাকে কিছু বলতে নিষেধ করেছে।”
আহত আরিফ হোসেন বজলুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার বাবা মিজানুর রহমান ফোন রিসিভ করেন। তিনি বলেন, “আমার ছেলে সম্পুর্ণ সুস্থ্য। ও বাড়িতেই আছে। আপনার কিছু জানার দরকার হলে আমার বাড়িতে আসেন।”
মূলতঃ রামনগর ইউনিয়নের রাজারহাট মোড়ে এ ধরনের মারামারির ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বে থাকা নেতারা সম্পৃক্ত থেকে স্থাণীয় যুবকদের চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করে আইনি ঝাঁমেলায় জড়াচ্ছে যা নিন্দনীয়। এসবের প্রতিকার চায় এলাকাবাসী।