খানজাহান আলী ২৪/৭ নিউজ ডেস্ক।। যে কোন সময় ঘোষণা হতে পারে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে দলের একটি অংশ। সকল অপপ্রচারের জবাব দিতে অচিরেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে বেশ দেরি হয়েছে বলে নেতাকর্মীরা জানান।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ৮টি উপজেলার নেতা-কর্মী, সমর্থক ও কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনে সভাপতি করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলনকে। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয় শাহীন চাকলাদারকে। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নির্বাচন করেন আবদুল মজিদ, হায়দার গণি খান পলাশ, খয়রত হোসেন, আবদুল খালেক, মোহাম্মদ আলী রায়হান, গোলাম মোস্তফা। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, আশরাফুল আলম লিটন, মীর জহুরুল হক। সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন আফজাল হোসেন, মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু। প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন। সদস্য প্রয়াত ইসমাত আরা সাদেক, স্বপন ভট্টাচার্য্য, কাজী নাবিল আহমেদ, সাইফুজ্জামান পিকুল, শেখ আফিল উদ্দিন, রণজিত কুমার রায়ের নাম ঘোষণা করেন। এতে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া অনেকখানি এগিয়ে যায়। আর এতে করে দলের ত্যাগী পোড় খাওয়া নেতারা আশার আলো দেখতে পায়।
আর সে সময় জানানো হয় ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি কেন্দ্রের কাছে জমা দিতে বলা হয়। অক্টোবর মাসে জেলা কমিটি আরও এক মাস সময় প্রার্থনা করে। সে সময় বলা হয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর করোনার কারণে দীর্ঘ দিন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কর্মকান্ডে সময় দিতে না পারায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে বিলম্ব হয়। দীর্ঘদিন কমিটি পূণাঙ্গ না হওয়ায় একটি স্বার্থনেশি মহল নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তারা বলছেন, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ভেঙে গিয়ে নতুন কমিটি গঠন হচ্ছে এমন বক্তব্য কেবলই গুঞ্জন। এটা গুজব। গুজবে কান দেবেন না।
কোনো ধরনের গুজব বা ভিত্তিহীন কোনো বক্তব্যে কান না দেওয়ার জন্য যশোরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অতি শিঘ্রই যশোর জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হবে।
যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, যারা যশোর জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে তারা দলের গঠনতন্ত্র মানে না। তারা শুধুমাত্র দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক হওয়ার লোভেই তারা এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। আসলে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব তাদের হাতে গেলে দল তারা চালানোর যোগ্যতা রাখেনা।
যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম বলেন, বিএনপি-জামায়াত এবং হেফাজতের উস্কানিতে একটি স্বর্থনেশি মহল যশোর জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি নিয়ে যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর জেলার সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির একঝাঁক প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ২১টি পদে নেতাতের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বিশ্ব মানবতার মা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেফাজতসহ মহামারী করোনা ভাইরাস, ফাঙ্গাস মোকাবেলা করছেন, ঠিক সেই মুহুর্তে যশোর জেলার একটি মহল আওয়ামীলীগের কমিটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তাদেরকে কখনই মানুষের পাশে দেখা যায়না। তারা শুধুমাত্র দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক পদের লোভে দলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তৃণমূলের ভাঙন সৃষ্টি করছে। সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়াও দলের যেকোন পদে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া যায়। অথচ কয়েকজন দলে ভাঙন ধরিয়ে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, নেত্রী সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বিচক্ষনতার সাথে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সিদ্ধান্ত নেবেন। অতি শ্রিঘ্রই যশোর জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসছে।