খানজাহান আলী 24/7 নিউজ।। যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন হত্যার ৭ বছর আজ। ২০১৪ সালের আজকের দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নিহতের রুহের মাগফিরাত কামনায় এলাকার মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বাড়িতে কোরআন খতমের আয়োজন করেছে পরিবার।
বিচারের দাবিতে পরিবারের সদস্যরা এখনও বাণী নীরবে নিভৃতেই কাঁদছেন। হত্যাকান্ডের মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত করে হত্যাকান্ডের সাত বছরে মামলা নিষ্পত্তিসহ সব আসামির মৃত্যুদণ্ড চায় নিহতের পরিবার।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সূত্র মতে, যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন এলাকার অসহায়, নিরীহ এবং সাধারণ লোকজনের ন্যায়বিচার আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও ছিলেন সরব। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারিসহ অপরাধিরা একত্রিত হয়ে ২০১৪ সালের ২৫ মে রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার রাজারহাট বাজারে ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসী একত্রিত হয়ে অস্ত্র, গুলি ও বোমা নিয়ে অতর্কিতভাবে আলমগীরের ওপর হামলা চালায়। এসময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। বোমার আঘাতে মারাত্মক আহত অবস্থায় প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১৮ জুন তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে রামনগর গ্রামের বাসিন্দা রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হাসান, শাহিন ওরফে পাগলা শাহিন, মহব্বত আলী, রফিকুল ইসলাম ওরফে বিসমিল্লাহ, অ্যাডভোকেট টিএম ওমর ফারুক, রামনগর পুকুরকুল এলাকার সুমন হোসেন ওরফে পাটালি সুমন, মানিক, রাকিব, রামনগর ধোপাপাড়ার আকাশ, একই এলাকার খাঁ-পাড়ার নাজমুল ইসলাম, মুরাদ, আহাদ, আফজাল, ওমর আলী, কাজীপুর গ্রামের ফসিয়ার রহমান গাজী, শফিক ওরফে শফিকুল, তরিকুল ইসলাম ও তফিকুল ইসলাম, সিদ্দিক, মুরাদ হোসেন ও ফরহাদ হোসেন, মহিদুল ইসলাম, আব্দুল জলিল ও তার দুই ছেলে আলম এবং আলিম, আব্দুল জব্বার খান, মফিজ, জিয়াউর রহমান, সুজন হাসান, শেখ রাসেল ইসলাম, ইয়াছিন আরাফাত ও শরফত হোসেন, আব্দুল গফুর, আকরামুল ইসলাম, শওকত হোসেন, শরিফুল ইসলাম মিন্টু, মিলন হোসেন, মুড়োলি খা’পাড়ার বিল্লাল হোসেন এবং মোশারেফ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
পরিবারের অভিযোগ, যারা আলমগীর হোসেনের হাত ধরে নেতা হয়েছেন তারাই এখন খুনীদের প্রশ্রয়দাতা। এনারা কখনই এ হত্যার বিচার চাননা। রাজনৈতিক ফয়দা লুটটে ঐ মহলটি এখনও খুুনিদের পক্ষ নিয়ে রামনগর এলাকায় মাদক-সন্ত্রাসের সিন্ডিকেট তৈরি করছে। অর্থের বিনিময়ে এসব স্বার্থনেশি মানুষগুলো এ হত্যাকান্ডের পেছনে ছিলো।
তারা বলেন, হত্যার প্রধান খুনিরা গেলো ৭ বছরে সারেন্ডার করেছে হত্যা মামলার অন্যতম কয়েজন আসামী। হত্যাকান্ডের মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হোক। হত্যাকান্ডের সাত বছরে মামলা নিষ্পত্তি হোক। আমরা এসব আসামীদের ফাঁসি চাই।
সূত্র মতে, এ মামলায় আটক আসামিদের মধ্যে কয়েকজন এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আলমগীর হত্যাকান্ডে জড়িতরা যশোর সদর আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজনের অনুসারী হওয়ায় থেমে আছে মামলার বিচার কার্যক্রম। একের পর এক দিন ধার্য হলেও মামলার চার্জ গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে বিচার কাজ দিনের পর দিন বিলম্বিত হচ্ছে।
নিহত আলমগীর হোসেনের স্ত্রী ও রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজনীন নাহার। খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।