স্টাফ রিপোর্টার ।। যশোরে ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য ও অবৈধ পথে ভারত গমনাগমনের সহযোগী ৩ সদস্যসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
জেলা ডিবি সূত্রে জানা যায়, যশোরের বাঘারপাড়া থানার চতুরবাড়ীয়া বাজারে ব্যাংক এশিয়া এজেন্ট শাখার এজেন্ট আনোয়ার জাহিদ তারর সহযোগীদের মাধ্যমে ২০২০-২১ সালে ৩৪ গ্রাহকের আমানত আনুমানিক মোট ৪১,০০৬০০/- ( একচল্লিশ লক্ষ ছয়শত) টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে।
এই ঘটনায় গত ৬ জুলাই ব্যাংক এশিয়ার পক্ষে রিলেশনশিপ অফিসার লিকো আহম্মেদ বাদী হয়ে প্রতারক আনোয়ার জাহিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় সুনাম ক্ষুন্ন হয় মর্মে মামলা করেন। মামলা নং-০১ ধারা-৪২০/৪০৯/৩৪ পেনাল কোড।
সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর মামলাটি জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ ও ডিবি যশোরের উপর ন্যাস্ত করে মামলাটির তদন্তভার এসআই আরিফুল ইসলাম এর উপর অর্পন করেন।
জেলা পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় যশোর “খ” সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসি ডিবি সোমেন দাশের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) রুপন কুমার সরকার, এসআই মফিজুল ইসলাম, এসআই আরিফুল ইসলাম, এসআই শামীম হোসেনের সমন্বয়ে ডিবির একটি চৌকশ দল ০৬ জুলাই রাতে ১০ টা থেকে ০৭ জুলাই সকাল ০৯ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানার খাজুরা, হালদা এলাকায়, বেনাপোর্ট পোর্ট থানা এলাকায় এবং চৌগাছা ও কোট চাঁদপুর, ঝিনাইদহ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারণা ও গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ মূল হোতা প্রধান আসামী আনোয়ার জাহিদকে গ্রেফতার করে। এসময় জাহিদসহ অবৈধপথে সীমান্তবর্তী দেশ ভারতে গমনাগমনের সহযোগীতার অপরাধে আরও ০৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
আটককৃতরা হলো, যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানার হালদা গ্রামের মৃত- জিন্দার আলীর ছেলে আনোয়ার জাহিদ (৪৫), মাগুরা জেলার শালিখা থানার ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মোঃ আবু বাক্কার কাজীর ছেলে মোঃ মুশফিকুর রহমান রতন (৩০), বাঘারপাড়া থানার জিন্দার আলী মোল্লার ছেলে মাজেদ মোল্লা (৫০) ও আব্দুল আজিজ মোল্লা (৪৮),
তদন্তে প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, কোতয়ালী থানার বানিয়াবহু পশ্চিমপাড়ার আব্দুল হোসনের ছেলে শাহিন হোসেন(৩৫), বেনাপোলের মহিষাডাঙ্গা (মাঝেরপাড়া) বারোপোতা গ্রামের মৃত- আয়না ঢালীর ছেলে রজ্জত আলী (৪৫), শিকড়ী পশ্চিমপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে ইমানুর হোসেন (৫২)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও উদ্ধারকৃত আমানত গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অপরাধ সত্যতা পেয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ১নং ও ২নং আসামী চতুর ও প্রতারক। তাদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিক জাল জালিয়াতি ও চেক ডিজ-ওনার মামলা আছে।আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধারের নিমিত্তে ১নং ও ২নং আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ০৭(সাত)দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এসময় ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন, ২৭টি গ্রাহকের আমানত জমা বই ( যা প্রতারক আনোয়ার জাহিদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও গোপনকৃত), আত্মসাৎকৃত নগদ ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।