করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় খুলনা মহানগরীর পাঁচটি হাসপাতালে করোনা ইউনিটের প্রায় তিন চতুর্থাংশ বেড এখন খালি রয়েছে। মাত্র দুসপ্তাহ আগেও করোনা আক্রান্ত রোগীদের চাপে বেড দিতে হিমশিম খেতেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা অঞ্চলে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নগরীর তিনটি সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি দুটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিট খোলা হয়। এই পাঁচটি হাসপাতালে ৫৬৫টি বেডের ব্যবস্থা থাকলেও এক পর্যায়ে করোনা রোগীর চাপ সামলাতে চরমভাবে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু সম্প্রতি বদলে গেছে সেই প্রেক্ষাপট। চিকিৎসকসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সংক্রমণের হার কমে আসায় হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির হারও উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার পাঁচটি হাসপাতালের ৫৬৫টি বেডের বিপরীতে ১৪৯ জন করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। ফলে অধিকাংশ বেড এখন খালি পড়ে রয়েছে।
সূত্র জানায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ২০০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে ৭৮ জন। অথচ কিছু দিন আগেও সেখানে বেড না পেয়ে অনেক রোগীকে ফ্লোরে থাকতে হয়েছে। একইভাবে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪৫ বেডের মধ্যে খালি আছে ২০টি। খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ৮০ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে মাত্র পাঁচ জন। অন্যদিকে বেসরকারি গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৫০ বেডের মধ্যে এখন রোগী আছে ১২ জন। এছাড়া বেসরকারি সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৯০ বেডের বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন ২৯ জন রোগী।
এদিকে, করোনা রোগী কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিগত তিন মাসের মধ্যে গত ২৩ আগস্ট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে খুলনা মহানগরীর পাঁচটি হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এছাড়া গতকাল নগরীর পাঁচটি হাসপাতালে মারা গেছে এক জন।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, মানুষের মধ্যে কিছুটা সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে খুলনা অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুও অনেক কমে গেছে। তাছাড়া লকডাউনও করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার জন্য অনেক কাজ দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, করোনার সংক্রমণ কমে গেছে বলে, একে কোনোভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নেই। সচেতন না হলে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।