রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে যশোরের নিজ বাড়িতে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। ওই শিক্ষার্থীর নাম ইমরুল কায়েস। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ইমরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই বাংলা হলে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামে। তার বাবা ও মা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে সে বড়।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ। তিনি ইমরুলের মৃত্যুতে বিভাগের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
সহপাঠীরা জানান, ইমরুল কায়েস মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। সে পরিবার ও নিজের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না। তার অস্বাভাবিক চলাচল ও আচরণের জন্য পরিবার থেকে তাকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারেও রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে মাকে মোটরসাইকেল কিনে দিতে বলেন। তারা তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিল। এরপর মায়ের কাছে ডিএসএলআর ক্যামেরা চান। জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে হতাশা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেন ইমরুল। পরে রুমের দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ইমরুলের হলের রুমমেট সুকান্ত রায় জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে সে ডিপ্রেশনে (হতাশা) ছিল। ডিপ্রেশন থেকেই আত্মহত্যা করেছে।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইমরুল দীর্ঘদিন ধরেই হতাশার পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেন। সেখানে লেখেন, ‘বিদায়, হাসিমাখা মুখ নিয়ে আর বুকে কষ্ট নিয়ে? আমি কখনো হারিনি, হেরে গেছে ব্যর্থতা, ব্যর্থতা আত্নহত্যার মূল।’ একইদিন তিনি মাগুরায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরির কয়েকটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন দেন ‘প্রথম ও শেষ ভ্রমণ’। এরপর তার ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন দেন ‘শেষ মুহূর্ত (লাস্ট মোমেন্ট)’। ইমরুল রিহ্যাব থেকে ফিরে গত ১০ জুন ফেসবুকে নিজের একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘৭১ দিন রিহ্যাব (পৃথিবীর জাহান্নাম) খাটার পর।’