পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা মিলন হোসেন (৪০) হত্যা মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি বেনাপোল ভবের বেড় পশ্চিমপাড়া বর্তমানে বেনাপোল পোড়াবাড়ি নারায়ণ পুরের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে হিরোকে (২৪) নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পূর্বমধ্যপাশা গ্রাম থেকে আটক করেছে।
এ সময় তার কাছ থেকে নিহত মিলনের একটি সাদা প্লাস্টিকের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ওই ব্যাগে ভিকটিমের পরনের কাপড়, ভিকটিমের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, দলিলের ফটোকপি ও ভিকটিমের এনআইডি কার্ডের একটি ফটোকপি ছিলো।
নিহত মিলন হোসেন যশোর সদরের চুড়ামনকাঠি গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। এ ঘটনায় নিহত মিলনের ছেলে বিপ্লব হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে বেনাপোল পোর্ট থানায মামলা করেন।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, তার নেতৃত্বে পিবিআইয়ের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শ্বশুর বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পূর্বমধ্যপাশা গ্রাম থেকে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে হিরোকে আটক করা হয়। মিলন হত্যাকান্ডের পর থেকেই হিরো পলাতক ছিলো।
মামলার তদন্ত কর্মকতা এস আই ডি এম নুর জামাল হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হিরো পুলিশের কাছে স্বীকার করে সে ও তার সহযোগীরা ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ও মাদকাসক্ত।
গভীররাতে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন রেলষ্টেশন এলাকায় আগত লোকজনদের কাছ থেকে সবর্স্ব ছিনিয়ে নেওয়াই তাদের পেশা। আটক হিরো ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনাস্থলের আশেপাশে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকে।
একপর্যায়ে মিলন হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অভিযুক্ত হিরো ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে।
এরপর থেকেই হিরো পলাতক ছিল। দীর্ঘদিন পর শ্বশুর বাড়ি নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামে গেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক বেনাপোল পোর্ট থানাধীন মাছ বাজারস্থ অভিযুক্তের নিজ ভাংড়ীর দোকান থেকে তার দেখানো মতে মৃত মিলন হোসেনের একটি সাদা প্লাষ্টিকের ব্যাগ (যাতে ভিকটিমের পরনের কাপড়,
ভিকটিমের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ এর ছবি, দলিলের ফটোকপি ও ভিকটিমের এনআইডি কার্ডের একটি ফটোকপি) উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত হিরো’কে শনিবার (১ জানুয়ারি) অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আহমেদের আদালতে সোপর্দ করলে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যহত রয়েছে।
উল্লেখ্য গেল বছরের ২৯ আগস্ট সকালে চুড়ামনকাঠির বাড়ি থেকে জমির দলিল নিয়ে মিলন বের হয়ে যায়। দুই দিন অতিবাহিত হলেও মিলন বাড়ি ফেরে না। পরে ৩১ আগস্ট সন্ধ্যা পৌনে ৭ টায় বেনাপোল রেল স্টেশনের ১শ গজ পূর্বে রেলকর্মচারিদের পরিত্যক্ত ভবনের সামনে থেকে মিলনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।