যশোরে ইয়াসিন আরাফাত নামে স্থানীয় এক যুবলীগ কর্মীকে হত্যার ১২ ঘণ্টার মধ্যে এর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার কাজে ব্যবহৃত গাছি দা, চাপাতি ও চাকু। এছাড়া একটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে।
গত বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৮টার দিকে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার শংকরপুর চোপদারপাড়া এলাকায় চোপদারপাড়া ব্রাদার্স ক্লাবের মধ্যে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাতকে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্র জখম করে।
ইয়াসিন আরাফাতের পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে জেলার উর্ধ্বতন পুলিশের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং জেলার পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে কোতোয়ালি থানা পুলিশসহ জেলা গোয়েন্দা শাখাকে কঠোর নির্দেশনা দেন।
পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় ওসি কোতয়ালি ও ওসি, ডিবি যশোর রুপন কুমার সরকার, পিপিএমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম, এসআই ইদ্রিসুর রহমানের সমন্বয়ে একটি টিম তদন্তে নেমে মামলা হওয়ার আগেই গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার সময় খুলনা খানজাহান আলী থানার শিরোমনি লিন্ডা ক্লিনিক থেকে ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী স্বর্ণকার রানা ও তার ভাই রুবেল হোসেনকে আটক করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
পরে মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য অনুযায়ী পুনরায় খুলনা শিরোমনি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার সময় ঘটনায় জড়িত আরো ২ আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে, যশোর কোতোয়ালি থানাধীন নাজির শংকরপুর চাতালের মোড় এলাকা থেকে ২টি বার্মিজ টিপ চাকু ও ঘটনাস্থলের আশপাশ ড্রেন হতে ১টি গাছি দা, ১টি চাপাতি, আসামিদের ব্যবহৃত পোশাক ও স্যান্ডেল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় ইয়সিন আরাফাতের স্ত্রী শাহানা আক্তার নিশা বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ও মাদক বিক্রি এবং চাঁদাবাজিতে আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ার কারনে এজাহারনামীয় আসামিসহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইয়াসিন আরাফাতকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দা দ্বারা কুপিয়ে ও চাকু দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে করে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে স্বর্ণকার রানা (৩৮), মো. রুবেল হোসেন (৩৫), মো. হাফিজুর রহমান (২৩), মো. আঃ কাদের ওরফে শান্ত (২২)।